
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত কিছু পণ্যের ওপর হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকে পড়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক পণ্যবোঝাই ট্রাক।
গত শনিবার (১৭ মে) ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন বিধিনিষেধ জারি করে। এতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিযোগ্য বেশ কিছু খাদ্যদ্রব্য, বর্জ্য তুলা ও সুতার মতো পণ্য ভারতের নির্দিষ্ট কিছু স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
সোমবার (১৯ মে) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বুড়িমারী স্থল শুল্ক ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৮ এপ্রিলও ভারত একটি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সড়কপথে তাদের বিমানবন্দর হয়ে তৃতীয় দেশে পোশাক রপ্তানি বন্ধ করেছিল।
রপ্তানি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন এই বিধিনিষেধ ‘আমদানি ও বন্দর সীমাবদ্ধতা নীতি ২০২৫–২৬’ অনুযায়ী আরোপ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রেডিমেড গার্মেন্টস, ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেটেড পানীয়, চিপস, স্ন্যাকস, মিষ্টান্ন, তুলা-সুতা, প্লাস্টিক ও পিভিসি পণ্য এবং কাঠের আসবাব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ি এলসিএস দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’
তবে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
বুড়িমারী বন্দর দিয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্দা হয়ে এসব পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হয়ে থাকে। নিষেধাজ্ঞার ফলে সোমবার সকালে এ পথে ফলের জুস, বিস্কুট, নুডলস, তুলা-সুতা ও অন্যান্য পণ্যের অন্তত ২০টি ট্রাক বন্দরে আটকে পড়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।
মেসার্স ট্রেড সিন্ডিকেটের স্বত্বাধিকারী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রেকায়েত হোসেন লাবু বলেন, ‘বুড়িমারী বন্দরে আমাদের ১৩টি পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকে আছে, যার মধ্যে রয়েছে ফলের জুস, বিস্কুট ও নুডলস। ভারতীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব গাড়ি পাঠানো যাচ্ছে না, ফলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।’
বন্দর সূত্রে আরও জানা গেছে, নতুন বিধিনিষেধে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের কিছু নির্দিষ্ট এলসিএস/আইসিপি দিয়ে উপরিউক্ত পণ্যগুলো প্রবেশ করতে পারবে না। তবে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল ও চূর্ণী পাথরের মতো পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্র্যাফিক) মেহেদী হাসান বলেন, ‘নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আমরা প্রজ্ঞাপনে দেখেছি। আজ (সোমবার) সকালে কিছু রপ্তানি পণ্যের ট্রাক বন্দরের শেডে প্রবেশ করলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে সেগুলো ভারতে প্রবেশ করেনি। ব্যবসায়ীরা সেগুলো ব্যক্তিগত হেফাজতে রেখেছেন।’
নিষেধাজ্ঞা কবে তুলে নেওয়া হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। ফলে সীমান্তবর্তী বন্দর এলাকায় দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা ও ব্যবসায়িক ক্ষতির শঙ্কা।
মিরাজ খান