
ছবিঃ সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নতুন সামরিক অভিযান ‘গিডিয়নস চ্যারিয়ট’ এখন হাসপাতালে কেন্দ্রীভূত। সচল চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো একে একে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযানে নেমেছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলি বাহিনী। গুরুতর অসুস্থ রোগীরাও প্রাণভয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
রবিবারের হামলায় ইসরায়েলি বোমা ও গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি। সোমবার ভোর রাত থেকে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। হামলার লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে জনবহুল আশ্রয় শিবির, যেসব স্থানে নিরাপত্তার আশায় জড়ো হয়েছেন অসহায় মানুষজন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজা দখলের উদ্দেশ্যে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করছে তারা। ‘গিডিয়নস চ্যারিয়ট’ নামের এই অভিযান টানা চতুর্থ দিনের মতো পূর্ণ শক্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। উত্তরে নেমেছে ইসরায়েলের ট্যাংকবহর। গাজায় জোরালো সামরিক উপস্থিতির অংশ হিসেবে পুরো উপত্যকাকে কৌশলগতভাবে বিভিন্ন খণ্ডে ভাগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেইসঙ্গে গাজাবাসীদের সরে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে।
অভিযানের তৃতীয় দিনে শুধুমাত্র উত্তর গাজায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ছিল মূল টার্গেট। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালটির প্রধান ফটক ও দেয়ালের একটি অংশ। ভেতরে থাকা চারজন চিকিৎসক, আটজন নার্সসহ অন্তত ৫৫ জনকে জিম্মি করে রেখেছে আইডিএফ। রোগীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হাসপাতাল ছেড়ে পালাচ্ছেন।
একইসঙ্গে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে চালানো হয়েছে অন্তত ৪০ দফা বিমান হামলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আল নাসের হাসপাতাল। মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবির ও দেইর আল-বালাহ অঞ্চলেও ড্রোন হামলায় বহু হতাহত হয়েছেন। কোনো সতর্ক বার্তা ছাড়াই এসব হামলা চালানো হয়েছে।
জাবালিয়া আশ্রয়শিবিরেও চালানো হয়েছে ব্যাপক হামলা, যেখানে শিশু ও নারীসহ অসংখ্য মানুষ অবস্থান করছিলেন। অভিযানটি তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রথম ধাপে রয়েছে ‘পপুলেশন মোবিলাইজেশন’, অর্থাৎ জনগণকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া। সেই লক্ষ্যেই উত্তর গাজায় চলছে ব্যাপক উচ্ছেদ।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, হামলা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গাজায় মানবিক বিপর্যয় দিন দিন গভীরতর হচ্ছে।
মারিয়া