
কাছ থেকে যতটুকু দেখার সুযোগ হয়েছে বা দেখেছি তাতেই বলতে পারি ব্যাটারি চালিত রিক্সার মধ্যে একটিও পজেটিভ গুণ নেই। কোনো একটা দিক থেকেই এই রিক্সা মানুষের উপকারে আসতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না। নির্মিত এই রিক্সার যে নির্মাণ কৌশল তাতেই রয়ে যায় মারাত্মক ত্রুটি। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তেমন কোনো যুতসই ব্যবস্থা রাখার সুযোগ নেই বলেই এই রিক্সা চালানোর সময় চালক পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না।
এই রিক্সা যারা চালায় তারা প্রশিক্ষিত নয়, তাদের কারো কাছে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা আছে বলে মনে হয় না। যার কারণে তারা উল্টোপথে যেমন গাড়ি চালায় তেমনি অযাচিতভাবে ডানে বামে ঘুরানো এবং যত্রতত্র পার্কিং করে সড়কপথে জট তৈরির মাধ্যমে মারাত্মক অসুবিধা সৃষ্টি করতে একবারও ভাবে না। সংখ্যায় ক্রমবর্ধমান এই রিক্সায় প্রতিদিন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ দরকার হয় তা দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর পক্ষে যোগান দিয়ে যাওয়া কখনও সম্ভব ছিল না। অধিকন্তু এই রিক্সার অনেক মালিককে দেখা গেছে অবৈধভাবে জাতীয় লাইন থেকে সংযোগ নিয়ে প্রতিদিন ব্যাটারি চার্জ করতে। এতে করে স্বাভাবিক অবস্থায় বিদ্যুতের যেমন ঘাটতি পড়ছে অপরপক্ষে কর্তৃপক্ষও হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিদ্যুৎ বিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে এসব রিক্সার মালিক হচ্ছে স্থানীয় মাস্তান টাইপের লোক যাদের অধীনে এলাকার উঠতি বয়সের ছেলেরাই (যারা বর্তমানে কিশোর গ্যাং বলে সর্বাধিক পরিচিত) এই রিক্সা চালায়। তাদের কাছে যাত্রী সাধারণের কোনো মান সম্মানের বালাই নেই। যাত্রীরা কিছু টাকা এবং সময় বাঁচানো লোভ থেকেই এ রিক্সার ব্যাবহার করলেও এক্সিডেন্ট হয়ে হাত-পা ভেঙ্গে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের অনেকে। এসব রিক্সা যারা চালায় তাদের কিছু অংশ প্যাডেল রিক্সার চালক, তারা চাইলে জীবন সংহারি এই বাহনের পরিবর্তে পুনরায় প্যাডেল রিক্সা চালাতে পারে। সুতরাং বলা যায় এইসব ঘাতক রিক্সার চালকদের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা খোঁজার দাবী সম্পূর্ণই অযৌক্তিক। সঠিকভাবে বিচার করলে দেখা যাবে, ইতিমধ্যে সড়ক মহাসড়কে যেসব গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে তার অধিকাংশই এই ব্যাটারি চালিত রিক্সা এবং অকালে জীবন দানকারী অধিকাংশই এই ঘাতক রিক্সার যাত্রী। সুতরাং সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আমি বলতে চাই এই সব ব্যাটারিচালিত রিক্সা চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হোক!
কোতোয়ালি, চট্টগ্রাম থেকে
প্যানেল