ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১

স্বাস্থ্যখাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা

মোতাছিম বিল্লাহ মুন্না

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্যখাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সকল স্তরের নাগরিকের অন্যতম প্রধান দাবি হয়ে উঠেছে দেশীয় চিকিসাসেবার উন্নতি মানসম্মত চিকিসা সেবা নিশ্চিত করা তার প্রেক্ষিতে  রোগীদের  বাংলাদেশমুখী বিদেশ নির্ভরতা কমাতে  বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা প্রাইভেট হাসপাতালের  মত সরকারি হাসপাতালের  আউটডোর সেবা ২৪ ঘন্টা চালু রাখতে হবে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী উন্নত বিশ্বের আদলে রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্টের মাধ্যমে ওষুধ তত্ত্বাবধান করতে  হবে আমরা জানি রোগীদের চিকিসা ব্যয়ের অনেকটাই চলে যায় ওষুধের ব্যয় মেটাতে সে কারণে  সরকারি হাসপাতালের ফার্মেসীতে রোগীর চাপ তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এখানে ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে এবং ফার্মাসিস্টদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে

বার সঠিক চিকিসার  জন্য প্রয়োজন নির্ভুল রোগ নির্ণয় কিন্তু এই কাজটি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে তেমন হয়না বিধায় মানুষ বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রাইভেট হাসপাতালে টেস্ট করাতে বাধ্য হয় উদাহরণস্বরূপ রক্তের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ঈইঈ করতে সরকারিভাবে যেখানে  ১৫০  টাকা খরচ হয়, ঠিক সেই টেস্ট প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে ৪০০ টাকার মত লাগে  কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ   সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্ভব হয় না কতৃপক্ষের সদিচ্ছা   ডঐঙ এর গাইডলাইন  মেডিকেল টেকনোলজিস্ট না থাকার কারণে

যদি এখানে পর্যাপ্ত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া যায় তবে রোগীরা  সকল প্যাথোলজিক্যাল, ইমেজিংসিটি স্কান এমআরইসহ জটিল ব্যয়বহুল টেস্টগুলি করতে পারবে নামমাত্র মূল্যে

কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে এই সেক্টরকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রাখা হয়েছে  জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি বাক্সবন্দী অকেজো করে রাখা হয়েছে  যার সুযোগটি নিচ্ছে সরকারি হাসপাতালের আশেপাশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার

কিন্তু  সেখানেও টেস্ট বাণিজ্য কমিশন বাণিজ্যের প্রভাবে রোগ নির্ণয় নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না বিশেষ করে এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক রিপোটর্, আরেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আরেক রিপোর্টের ফল আসছে বাধ্য হয়ে রোগীরা দেশীয় চিকিসা ব্যবস্থার উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করে বিদেশমুখী হচ্ছে এতে যেমন একদিকে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের চিকিসা সেবার মান তলানিতে পড়েছে

অবস্থা থেকে উত্তরনের উপায় হলো সরকারি হাসপাতালের চিকিসা আমূল পরিবর্তনের ওপর জোর দিতে হবে এখানে ওষুধ কমিশন বন্ধ করতে  হবে এবং টেস্ট বাণিজ্য বন্ধ করে সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে

বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ দয়া করে চিকিসা সেবার অন্যতম প্রাণভোমরা ফার্মাসিস্ট মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে তাদেরকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দিয়ে কাজে লাগান দেখবেন স্বনির্ভর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়তে তারাই হবে বাংলাদেশের চিকিসাসেবা পরিবর্তনে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

ফার্মাসিস্ট, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী

কুতুব

×