ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

সুষ্ঠু ঈদ আয়োজন

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ১৪ জুন ২০২৪

সুষ্ঠু ঈদ আয়োজন

.

কাল বাদে পরশু ঈদ। ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ আয়োজনে কিছু বাড়তি বিষয় থাকে। পশু কোরবানি, পশুর হাট বসানো এবং কোরবানির পরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এছাড়াও নিয়মিত কিছু বিষয় থাকে যাতে অনিয়ম কাম্য নয়। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কোরবানির পশুর সহজলভ্যতা, পরিবহন, হাট ব্যবস্থাপনা, অনলাইন মার্কেট মনিটরিং, ঈদযাত্রা, কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, চামড়া সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা, ঈদ ফিরতি যাত্রাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে একটি সমন্বিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।   

প্রশাসন বেশ আগে থেকেই এবার বলে আসছে যে বছর কোরবানিযোগ্য পশুর যথেষ্ট জোগান রয়েছে। উদ্বৃত্ত পরিমাণ কোরবানির পশুর সরবরাহ থাকায় তাই কোনো সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই। বাজার ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পরিচালিত হলে যৌক্তিক মূল্যে কোরবানির পশুর ক্রয়-বিক্রয় হবে বলে প্রত্যাশা করা যায়। কোনোরূপ কৃত্রিম সংকট যেন তৈরি না হতে পারে, সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যেই মাঠ প্রশাসনসহ আন্তঃদপ্তরের সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরেজমিন তদারকি অব্যাহত রাখছে। পশু পরিবহন, ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তা এবং যেকোনো ধরনের প্রতারণা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্ভাব্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, এমনটাই প্রত্যাশিত।                     

সড়ক, নৌ রেলপথে ঈদযাত্রা নাগরিকদের জন্য নানা ভোগান্তিতে পর্যবসিত হয়ে থাকে প্রতিবার। ঈদযাত্রা নিরাপদ নির্বিঘœ রাখতে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতা কাম্য। প্রথমদিনেই ট্রেনের শিডিউলে অনিয়ম তথা অতিরিক্ত বিলম্ব যাত্রীদের বিরক্তি উৎপাদন করেছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকিট বিক্রয়ের বিষয়টি নিবিড়ভাবে মনিটরিংয়ের জন্য নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ইতোপূর্বে চরম অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। এবার সেক্ষেত্রে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে। নৌযানসমূহে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলেও বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। উচ্চপর্যায়ের ওই বৈঠকে কর্মীদের একত্রে ছুটি প্রদান না করে ধাপে ধাপে ছুটি প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য এফবিসিসিআই বিজেএমইএ নেতাদের প্রতি যে অনুরোধ জানানো হয়, সেটিকে ইতবাচক হিসেবেই দেখা যায়। কেননা, দূরদূরান্তে যারা নাড়ির টানে দেশের বাড়ি গিয়ে ঈদ করেন, তাদের পক্ষে তিন দিনের সাধারণ ছুটি কোনোক্রমেই পর্যাপ্ত হয় না।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুত সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ দপ্তরসমূহকে নিবিড় মনিটরিং এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ঈদের ছুটিতে ছিনতাই, রাহাজানি, প্রতারণার মতো গণ-উপদ্রব সৃষ্টিকারী চক্রসমূহের অপকৌশলকে নস্যাৎ করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব সবাই স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালনে আন্তরিক থাকবেন। ঈদের আনন্দে শামিল হওয়া প্রতিটি নাগরিকেরই দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। রয়েছে সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে অন্যকেও আনন্দ উপভোগের সুযোগ করে দেওয়া। প্রত্যেকের সম্মিলিত সচেতনতাই পারে ঈদ আয়োজনকে সফল করে তুলতে।

×