ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ডেঙ্গু ও করোনার ঝুঁকি

-

প্রকাশিত: ২০:২৭, ১৮ মে ২০২৪

ডেঙ্গু ও করোনার ঝুঁকি

মাঝে দেশব্যাপী কমবেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় গরমের অসহনীয় দশার সাময়িক অবসান হয়েছিল। বলা হয়েছিল নতুন করে আর তাপপ্রবাহ আসবে না। পূর্বাভাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তিন-চারটি জেলা বাদে দেশব্যাপী আবারও মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। নতুন করে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। প্রতিবছর মে মাসে দেশে সর্বোচ্চ গরম পড়ে। এই গরম পরবর্তী মাসগুলোয় কিছুটা কমে আসে।

মাঝে তাপমাত্রা সহনীয় হয়ে উঠলেও বর্তমানে এবং মে মাসের সামনের দিনগুলোয় তাপমাত্রা বাড়বে বলেই আশঙ্কা। শৈত্যপ্রবাহকালে যেমন বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি তাপপ্রবাহ চলাকালেও সুস্থ থাকার জন্য কিছু স্বাস্থ্যগত সতর্কতা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। 
বিপদের খবর হচ্ছে, দেশে আবারও নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দুই বা তিনটি টিকা নেওয়ার পরেও মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে মৃত্যুঝুঁকি না থাকলেও ভোগান্তি রয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশি ভুগছেন। নতুন করে স্বাস্থ্য জটিলতাও বাড়ছে। সবচেয়ে আশঙ্কার হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীও বাড়ছে। চলতি বছরে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। সাড়ে চার মাসে মারা গেছেন ৩২ জন।

গত দুই বছরের প্রথম সাড়ে চার মাসের পরিসংখ্যান দেখলে এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, প্রতিবছর এডিস মশার বিস্তার বেশি হচ্ছে। মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। গত ১৫ দিনে ৮ জনের মৃত্যুর খবরও আছে। মানুষ বর্তমানে ত্রিমুখী স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির ভেতরে রয়েছে- ডেঙ্গু, করোনা এবং তাপপ্রবাহ। তাই বাড়তি সতর্কতার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। আতঙ্ক নয়, সতর্কতা ও সচেতনতাই হতে পারে রক্ষাকবচ। 
অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানা আবশ্যক।

দুঃখের সঙ্গেই বলতে হয়, ২০১৯ সালের ডেঙ্গুর ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে কিছুই শিক্ষা নেননি সিটি মেয়ররা। অতীতেও আমরা গভীর হতাশা ও ক্ষোভের সঙ্গে দেখেছি- ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশনসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর সর্বাত্মক সক্রিয়তা প্রত্যাশিত, তখন এর কর্তাব্যক্তিরা গা বাঁচানোয় ব্যস্ত। ডেঙ্গু মোকবিলায় এখনই যৌথ অভিযানে নামতে হবে।

দূরদর্শী পরিকল্পনা ও সময়োপযোগী যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু দায়িত্বশীল সংস্থার দায়িত্বহীনতার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দূর করার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু বাগাড়ম্বর করে দায়িত্ব এড়ানোর সামান্যতম সুযোগ নেই।

×