ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

আস্থা অর্জনের সুযোগ ইসির

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৩২, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

আস্থা অর্জনের সুযোগ ইসির

বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্যেই জমে উঠেছে জাতীয় নির্বাচন

বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্যেই জমে উঠেছে জাতীয় নির্বাচন। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো মনোনয়ন ঘোষণা এবং নির্বাচন কমিশনে মনোয়পত্র জমা দেওয়ার পর জমজমাট হয়ে উঠেছে নির্বাচনের পরিবেশ। একই সঙ্গে নির্বাচন বর্জনকারীদের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিও স্তিমিত হয়ে গেছে। এর মধ্যেই সারাদেশে নির্বাচনী বাতাস বাইতে শুরু করেছে। আলোচনা হচ্ছে দলগুলোর প্রার্থী নিয়ে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশি। এবার এক তৃতীয়াংশ আসনেই দলটি বদল করেছে প্রার্থী। অর্থাৎ, তিনশ’ আসনে গত নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে ১০৪ জনই এবার নেই।

তাদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য ৭১ জন। এসব আসনে রয়েছেন ৭৯ জন নতুন মুখ। আগে সংসদ সদস্য ছিলেন কিন্তু গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি, এবার ফিরেছেন এমন ২৭ জন। তিনশ’ আসনের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন নারী। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে তুলনায় এবার নারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ। মনোয়ন তালিকায় রয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। 
মনোয়ন ঘোষণার আগে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মনোনয়ন প্রত্যাশীর উদ্দেশে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এতে আগামী নির্বাচনে দলীয় কিছু কৌশলের কথা জানান তিনি। বিষয়গুলো নিতান্তই দলের অভ্যন্তরীণ এবং নির্বাচনী কৌশল হলেও এগুলো চলে আসে প্রচার মাধ্যমে। এর মধ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত রয়েছে। যেমন, কোনো প্রার্থী যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে না পারেন, নির্বাচনী প্রচারের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থীকে বাধা না দেওয়া, ভোটার উপস্থিতির ওপর জোর দেওয়া, প্রতি আসনে ড্যামি প্রার্থী রাখা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করে দেওয়া। এর মধ্যে ড্যামি প্রার্থী রাখা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার পক্ষে- বিপক্ষে আলোচনা হচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে।
ড্যামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা প্রতি নির্বাচনেই থাকে। কারণ হচ্ছে মূল প্রার্থীর মনোনয়ন কোনো কারণে বাতিল হলেও যেন আসনটি দলীয় প্রার্থীশূন্য হয়ে না যায়। বাছাইয়ের পর এসব ড্যামি প্রার্থী সাধারণত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। সকল বড় রাজনৈতিক দলেরই এই কৌশল থাকে। ভারতের নির্বাচনেও ড্যামি প্রার্থী থাকে রাজনৈতিক দলগুলোর। প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, দলীয় কোনো নেতা চাইলে স্বতন্ত্র ভাবেও নির্বাচন করতে পারবেন। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। দলের অনেক নেতা মনে করেন, এই সিদ্ধান্তের কারণে সারাদেশে মাঠপর্যায়ে সংগঠনের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।

দল থেকে একাধিক প্রার্থী থাকলে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়বেন। এতে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বৃদ্ধি পাবে। অনেক ক্ষেত্রে এই কোন্দল দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। নির্বাচনের পরও অব্যাহত থাকতে পারে এই দ্বিধাবিভক্তি। এই সিদ্ধান্তের পক্ষে দলীয় প্রধানের যুক্তি  হচ্ছে, ‘আমরা চাই এবার নির্বাচন সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। বিরোধী দল যদি প্রার্থী দিতে না পারে, তবে দলীয় প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন। বিরোধী দলের প্রার্থী দুর্বল হলেও নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না। এক্ষেত্রে দলীয় একাধিক প্রার্থী থাকলে নির্বাচন জমজমাট হবে। নিশ্চিত হবে ভোটার উপস্থিতি।’ 
রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সুবিধা অনুযায়ী নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ করবে? এটিই স্বাভাবিক। এ নিয়ে কারও কোনো বক্তব্য থাকার সুযোগ নেই। কৌশলের সুবিধা-অসুবিধার কথা তারা নিজেদের ফোরামে আলোচনা করবেন। এর প্রতিকারের ব্যবস্থাও তারা করবেন। দেশের মানুষ প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করে নির্বাচন করবেন তাদের পছন্দ মতো জনপ্রতিনিধি। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় এটিই নিয়ম। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন বর্জন কিংবা অংশগ্রহণ তাদের সাংবিধানিক অধিকার।

এ নিয়েও সাধারণ ভোটারদের বলার কিছু নেই। তবে নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য কোনো রাজনৈতিক দল সহিংসতার আশ্রয় নিলে এর জবাবও সাধারণ মানুষের দেওয়ার অধিকার রয়েছে। ২০১৪ সালে এর প্রমাণ হয়েছে। নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। নির্বাচনের পরও তাদের জ¦ালাওপোড়াও ধ্বংসযজ্ঞ ক্ষেপিয়ে তুলেছিল সাধারণ মানুষকে। এক সময় মানুষ সকল ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে রুখে দাঁড়ায়। অনির্দিষ্ট কালের জন্য ডাকা অবরোধ কর্মসূচী প্রত্যাহারেরও সুযোগ পায়নি বিএনপি-জামায়াত নেতারা।

সহিংস রাজনীতির জন্য তাদেরকে জনতার আদালতে দাঁড়াতে হয়েছে। দীর্ঘ সময় তারা তেমন ভাবে মাঠে দাঁড়াতেই পারেনি। হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি ঘোষণার সাহস পাননি। আবার ঘুড়ে দাঁড়াতে তাদের দশটি বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। তাও আবার করোনা মহামারি ও আন্তর্জাতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনৈতিক মন্দার সুযোগ নিয়ে।
প্রধান বিরোধী দল এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত হতো। বিএনপির অনুপস্থিতিতে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে ভূমিকা রাখার কথা জাতীয় পার্টির। সারাদেশে সাংগঠনিক কাঠামো এবং জনসমর্থনের দিক থেকে তাদের সেই সামর্থও রয়েছে। অভ্যন্তরীণ সমস্যায় দলটি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। প্রধান বিরোধী দল হওয়ার মতো মানসিক দৃঢ়তাও নেই দলের নেতাদের মধ্যে। এজন্য ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতেই তাদের আগ্রহ বেশি। তারা বুঝতেই পারছেন না, এবারই তাদের দেশের প্রধান বিরোধী দল হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ।

মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারলে শুধু প্রধান বিরোধী দলই নয়, আগামীতে ক্ষমতার দাবিদারও হতে পারে দলটি। শুধু প্রয়োজন হচ্ছে সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শুধু নয়, ভবিষ্যতে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গেও তাদের সখ্য বা জোট করা উচিত নয়। উজ্জ্বল আলোর কাছে ¤্রয়িমাণ প্রদীপ কখনো নিজেকে প্রস্ফুটিত করতে পারে না। বিএনপির নির্বাচন বর্জনের কারণে বিরোধী দলের আসনটি এখন ফাঁকা। গণবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে সামনে দীর্ঘ সময় বিএনপি মাথা তুলতে পারবে না। জাতীয় পার্টি চাইলে সহজেই এই স্থান দখল করে পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক দল হয়ে উঠতে পারে।
বিরোধী দল হিসাবে জাতীয় পার্টির ওপর ভরসা কম ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নীতিনির্ধারকদের। দলের ক্ষতি হবে জেনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে উন্মুক্ত নির্বাচনের নীতি গ্রহণ করতে হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকায় প্রতিটি আসনে দলের একাধিক প্রার্থী তৈরি হয়েছে। ক্ষমতার স্পর্শে এলাকার অনেক প্রভাশালী ব্যক্তি ভিড় জমিয়েছে আওয়ামী লীগের প্ল্যাটফর্মে। অর্থনৈতিক ক্ষমতা রয়েছে এসব প্রার্থীর। এখন তারা সবাই জনপ্রনিধি হওয়ার দৌড়ে শামিল হয়েছেন। সুযোগ পেয়ে দেশের প্রায় প্রতিটি আসনেই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

এখন প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন ৩/৪ জন করে। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারলে ক্ষমতসীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরাই নির্বাচন জমিয়ে দিতে যথেষ্ট। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অবশ্য পরে আভাস দিয়েছেন, ‘উম্মুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ শেষ পর্যন্ত ‘নিয়ন্ত্রিত’ হতে পারে। মনোয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া স্পষ্ট হবে। 
নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী মনোনয়পত্র বাছাই, প্রত্যাহার এবং প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করতে পারবেন না। এই মুহূর্তে প্রার্থীরা তা করছেন না। তবে কোনো প্রার্থী বসেও নেই। মনোনয়প্রত্র জমা দিয়েই তারা অনানুষ্ঠানিক প্রচারে নেমে পড়েছেন। অনেক প্রার্থী ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া প্রার্থনা করছেন, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিচ্ছেন, মসজিদ-মন্দির, হাঁট বাজারসহ লোকসমাগম রয়েছে, এমন স্থানগুলোতে যাতায়াত করছেন। বিএনপি মাঠে না থাকলেও সাধারণ ভোটাররা বসে নেই। পাড়ায় মহল্লায় ভোটের আলোচনা তুঙ্গে।

প্রার্থীদের নিয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ চলছে। আলোচনা হচ্ছে বর্তমান সংসদ সদস্যদের আমলনামা নিয়ে। যাদের আমলনামায় নেতিবাচক কর্মকা-ের পাল্লা ভারী তাদের এবার দাঁড়াতে হবে জনতার মুখোমুখি। দলীয় মনোয়নের বৈতরণী পার হয়ে গেলেও জনতার কাছে তাদের ক্ষমা হবে না। এমন অনেক প্রার্থীকে হয়তো এবার ফিরতে হবে শূন্য হাতে।
সরকার এবং নির্বাচন কমিশন এবার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বদ্ধপরিকর। তারা তাদের এই অঙ্গীকারের বাইরে যেতে পারবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইতোমধ্যে জনসমক্ষে এর কারণও ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্র্থীদের সঙ্গে মতবিনিয় অনুষ্ঠানে নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। কেউ যেন এমন চিন্তা না করেন এজন্য তাদের সতর্ক করেছেন। কেউ এমন করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও কথাও স্পষ্ট করে বলেছেন।

স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের কাছে আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দুর্নীতি ও অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত, পক্ষপাতদুষ্ট, বিগত পাঁচ বছর গণবিরোধী কার্যক্রমের সম্পৃক্ত এবং মানুষের পাশে না থাকা প্রার্থীরা এবার খুব একটা সুবিধা করতে পারবেন না। বিগত দিন সংসদ সদস্য থাকার পরও এলাকার ভোটারদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হলে এর জবাব তাকে দলের কাছেও দিতে হবে। এমন চিন্তায় ইতোমধ্যে অনেক প্রভাবশালী প্রার্থীর কপালে ভাঁজ পড়েছে।
মাঠপর্যায়ে নির্বাচন যেভাবে জমে উঠেছে তাতে বিএনপির পক্ষে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়া ঠেকানো সম্ভব হবে না। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার নিশ্চয়তা ইতোমধ্যে তাদের কাছে পৌঁছে গেছে।  নির্বাচনের দিন ভোটাররা শুধু দল বিবেচনা করবেন না, প্রার্থীদের গুণাগুণও তাদের বিবেচনায় থাকবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে ভোটাররা কারও না কারও পক্ষ সমর্থন করতে বাধ্য। কোনো সংসদ সদস্য যদি ভাল কাজ করে থাকেন, তাদের সমর্থন জানাতে ভোটাররা কেন্দ্রে যাবেন। কেউ অপকর্ম করে থাকলে এর প্রতিবাদ করার জন্যও তারা কেন্দ্রে যাবেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ে সমর্থন জানানো এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেও কেন্দ্রে যাবেন অনেক ভোটার। সারাদেশে নির্বাচনী হাওয়ায় এমন বার্তাই পাওয়া যাচ্ছে। বিরোধী দলের নেতিবাচক কর্মসূচিও তাই ভোটের হাওয়া দমাতে পারেনি। উল্টো তাদের কর্মসূচিই ব্যর্থ হতে বসেছে। 
দলীয় সরকারের অধীনে অবাধÑ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় এমন একটি ধারণা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। একটি রাষ্ট্রের পক্ষে এটি খুব একটা সুখকর কিছু নয়। সাধারণ মানুষ পাঁচ বছর পর একবার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পান। তারা এটিকে খুবই মূল্যবান মনে করেন। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটলে প্রতিক্রিয়া হয় মারাত্মক। বিশে^র কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান নেই। সকল দেশে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যে কোনো মূল্যে এই অবস্থা থেকে আমারদেরও বের হতে হবে। এবার সাধারণ মানুষের এই ধারণা ভেঙে দেওয়ার সুযোগ এসেছে নির্বাচন কমিশনের সামনে।

দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সরকার প্রধান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, তারা এমন অভিযোগের অংশ হতে চান না। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ রায় দিলেই তারা ক্ষমতায় থাকবেন। এখন নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারলে রাষ্ট্র যেমন একটি নির্বাচিত সরকার পাবে, তেমনি এই অপবাদ থেকেও মুক্ত হতে পারবে। ভবিষ্যতে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে কারও মনে সংশয় থাকবে না। জাতি মুক্তি পাবে নির্বচন কেন্দ্রিক অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি থেকে।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×