ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সৌদি আরবের সতর্কবার্তা

প্রকাশিত: ২০:৫১, ৯ জুন ২০২৩

সৌদি আরবের সতর্কবার্তা

.

সোমবার সৌদি সরকারের হজ ওমরা মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশকে কড়া সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল জুনের (বুধবার) মধ্যে ৮০ শতাংশ ভিসা সম্পন্ন করার। অন্যথায় বাংলাদেশকে সৌদি আরবের বিধিনিষেধে পড়তে হতে পারে। এমনকি বাংলাদেশকে লাল তালিকাভুক্তও করা হতে পারে, যার যাবতীয় দায়ভার সংশ্লিষ্ট হজ অফিসকেই নিতে হবে। সৌদি সরকারের এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বছরে মোট এক লাখ ২৭ হাজার হজযাত্রীর মধ্যে ৯০ শতাংশ ভিসা বুধবার সন্ধ্যার মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ফলে সৌদি আরবের শর্ত মেনে যাত্রায় রেড নোটিস এড়িয়েছে ঢাকা। শিগগিরই শতভাগ ভিসা সম্পন্ন হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশকেই চিঠি লিখে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে সৌদি আরব। তবে আশার কথা এই যে, বাংলাদেশ সেটা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েই রেড এলার্ট মোকাবিলা করেছে।

হজ এজেন্সিগুলো কম পয়সায় প্যাকেজ ঠিক রেখে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে চায়। তাদের এই    মুনাফালোভী মানসিকতার জন্য এবারও অন্য বছরের মতো হজযাত্রীদের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়। মদিনায় মসজিদের আশপাশের বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকার সস্তা হোটেলগুলো ভেঙ্গে দেওয়ায় বছর বেশি ভাড়ায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি ভাড়া নিতে হচ্ছে। এই বাড়তি ব্যয় এড়াতে এজেন্সিগুলো লম্বা সময়ের প্যাকেজের পরিবর্তে শর্ট প্যাকেজ নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেছে। এজেন্সিগুলোর লক্ষ্য শর্ট প্যাকেজের মাধ্যমে প্রতিটি হজযাত্রীর কাছ থেকে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ করা। তাদের এই অপকৌশলের কারণেই এতদিন প্রায় অর্ধেক ভিসা কার্যক্রম নানা জটিলতায় আটকে ছিল। কিন্তু সৌদি আরবের রেড এলার্ট জারির তিনদিনের মাথায় ৯০ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়ে যায়।  

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবার ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি আবশ্যকীয় শারীরিক আর্থিক ইবাদত। হজের উদ্দেশ্য হলো মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করা। বরাবরই অভিযোগ ওঠে, ট্রাভেল এজেন্সিগুলো হজ ওমরাযাত্রীদের সঙ্গে নানা অনিয়ম প্রতারণা করে থাকে। দেশ থেকে হজের উদ্দেশ্যে যারা মক্কা যান তাদের অনেকে প্রতিবছর অসাধু হজ এজেন্সি স্থানীয় মোয়াল্লিমদের যে চরম অব্যবস্থাপনা প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন তা অবর্ণনীয়। টিকিট বিলম্বে বুকিং দেওয়া, বুকিং দেওয়ার পর হঠাৎ বাতিল করা, লাইসেন্স না থাকলেও হজের জন্য টাকা নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কখনো কখনো টাকা নিয়ে হজে না পাঠানোর অভিযোগও শোনা যায়। ধর্মীয় এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রতারণা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ। যারা দেশের সংবেদনশীল ধর্মীয় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রতারণা করে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক। একই সঙ্গে হজযাত্রীরা যেন কোনোরকম ভোগান্তি ছাড়াই হজ ওমরা পালন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও জরুরি।

×