ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্য নিরাপত্তায় ‘পার্টনার’

প্রকাশিত: ২১:২১, ২ জুন ২০২৩

খাদ্য নিরাপত্তায় ‘পার্টনার’

.

কৃষি বিভাগ দেশের বিদ্যমান কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে। লক্ষ্যেপ্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফর্মেশন ফর নিউট্রিশন   এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ শীর্ষক একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। সময়কাল জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৮। অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) দেশের আটটি বিভাগ, ১৪টি কৃষি অঞ্চল, ৬৪টি জেলাসহ ৪৯৫টি উপজেলার মোট হাজার ৫৭১টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হবে প্রকল্পটি। এর মাধ্যমে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ফল ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সবজির প্রটোকল প্রস্তুত করা হবে। এতে ফল, সবজি উৎপাদন থেকে শুরু করে রপ্তানির পুরো প্রক্রিয়া থাকবে। এছাড়াও সরকার গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসের মাধ্যমে ফল সবজির আওতাধীন এলাকা লাখ হেক্টর এবং উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত লাখ হেক্টরে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১০ লাখ কৃষককে উত্তম কৃষিচর্চার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শক্তিশালী করা হবে বীজ নেটওয়ার্ক। উদ্ভাবন করা হবে সব ধরনের বিরূপ পরিবেশ সহনশীল উচ্চ ফলনশীল পাঁচটি ধানের জাত। লাখ হেক্টর নতুন কৃষিজমি সেচের আওতায় আনা হবে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে

দেশের ৬৪ জেলায় ৪৯৫টি উপজেলায় কোটি ২৭ লাখ কৃষককে সব ধরনের তথ্যসংবলিত স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। স্থাপন করা হবে ১০টি অ্যাক্রিডেটেড ল্যাবরেটরি। ধান ধান-ভিন্ন অন্যান্য ফসলের আবাদ সম্প্রসারণে প্রকল্পের আওতায় যথাযথ প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। খাদ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করা হবে আধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপনের মাধ্যমে। কৃষিবিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি বাস্তবায়ন হলে কৃষিকে দেখা যাবে নতুন রূপে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈচিত্র্য আসবে কৃষিতে। বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিণত হবে বিদ্যমান কৃষি। বাড়বে রপ্তানি আয়।

দেশের অর্থনীতির অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষি, যা খাদ্য পুষ্টি নিরাপত্তা প্রদানের প্রধান এবং অন্যতম উৎস। বর্তমানে দেশে জিডিপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। অথচ একদিকে দিন দিন কৃষিজমির পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে জনসংখ্যা। তাই কৃষির উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। বিপুল জনসংখ্যার জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, জীবনযাত্রায় মানোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কৃষি সেক্টরের গবেষণা কার্যক্রমের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সম্প্রসারণ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ফসলোত্তর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, বিপণন এবং লজিস্টিক অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি সেক্টরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও গবেষণা উন্নয়নের জন্য বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করাসহ কৃষিতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কৃষিবান্ধব এসব উদ্যোগ ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে বলেই প্রত্যাশা।

×