ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

সবজির বাজার চড়া, দাম কমেছে মিনিকেট চালের

আল জুবায়ের, সিটি রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৪:৫৭, ৯ মে ২০২৫

সবজির বাজার চড়া, দাম কমেছে মিনিকেট চালের

ছবি: জনকণ্ঠ

রাজধানীর বাজারে শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হওয়ায় সবজির দাম চড়া হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ সবজির দামই ৮০ টাকার ওপরে। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকটি নতুন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম কমে আসবে।

অন্যদিকে, বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে নতুন মিনিকেট চালের দাম কমেছে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা। বাকিগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর নিউমার্কেট, ঝিগাতলা কাঁচাবাজার, লালবাগ বউ বাজার ও পলাশী কাঁচা বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কয়েকটা সবজি ৬০ টাকার নিচে হলেও বেশির ভাগ ৮০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি বরবটি ৮০, ফুলকপি-বাঁধা কপি প্রতি পিচ ৮০, লম্বা বেগুন ও গোল বেগুন ৮০, পেঁপে-লতি ৮০ ও কাঁকরোল ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা, ঝিঙা, গাজর ৬০, কাঁচা মরিচ, ঢ্যাঁড়স, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শশা ৫০, লেবুর হালি ৩০, চিচিঙ্গা ৬০, লাল শাক ১৫, পালংশাক ও কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা আঁটি এবং পুঁইশাক ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পলাশী মার্কেটের সবজি বিক্রেতা মতিয়ার হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, "বর্তমান বাজারে শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হয়েছে। নতুন কয়েকটি সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে  সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম কমতে পারে। আর গরমে সবজির দাম তুলনামূলক বেশিই থাকে।"

গত সপ্তাহের মতো আলু-পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫ ও দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ও মানভেদে ২-৩ টাকা দামে পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া দেশি রসুন প্রতি কেজি ১৬০- ১৮০, চায়না রসুন ২১০-২২০, দেশি আদা ১৪০ এবং চায়না আদা প্রতি কেজি ২০০ দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু খুব একটা প্রভাব পড়েনি; শুধু মাত্র নতুন মিনিট চাল প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহের ৮০-৮৫ টাকার মিনিকেট চলতি সপ্তাহে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া পুরাতন মিনিকেট আগের দামেই ৭৮-৯০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৫৫ টাকা, প্রতি কেজি আটাশ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়, নাজিরশাইল ৭৬ থেকে ৮৮ টাকা, নতুন পাইজাম ৫৮-৬০ টাকা এবং পোলাও চাল ১১৬ থেকে ১২০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লার বাজারগুলোতে এই দামে ১-২ টাকা পার্থক্য দেখা গেছে।

নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের মুদি ব্যবসায়ী রফিক বলেন, “কয়েক মাস ধরে চালের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। এখন সরু চালের দাম একটু কমেছে। আশা করছি, পুরোপুরি সরবরাহ শুরু হলে সব ধরনের চালের দাম আরও কমবে।”

ঝিগাতলায় বাজার করতে আসা হাসান মিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, “সরু চালের দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো মোটা চালের ভাত বেশি খায়, এটার দাম না কমলে মানুষের জীবন চলবে কিভাবে? সরকারকে ভালো করে বাজার মনিটরিং করতে হবে।”

এ দিকে গত (১৫ এপ্রিল) সরকার প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪ টাকা বৃদ্ধি করে। এর পর থেকেই অস্থিরতা দেখা যায় সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে। বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বর্তমান বাজারে প্রতি লিটার খোলা পামতেল ১৬৫ টাকা, বতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন ১৮৯, ৫ লিটার পুষ্টি ৯০০, বতলজাত ৫ লিটার তীর ৯১০ থেকে ৯২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। 

সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার ও সোনালী মুরগি ১০ টাকা ওঠানামা করে। গত সপ্তাহের ১৯০ টাকার ব্রয়লার ১০ টাকা কমে ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সোনালী মুরগি প্রতি কেজি অপরিবর্তিত ২৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি ব্রয়লার মুরগি ডিমের। প্রতি হালি ৪০ থেকে ৪২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারভেদে এ দামের পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংশ ৮০০ ও খাশির মাংস ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, পোয়া মাছ ৬০০, পাবদা ৫০০, ৫ কেজির রুই প্রতি কেজি ৫০০, বড় তেলাপিয়া ২৬০-২৭০, ফলই ৫০০, বড় পাঙ্গাশ ২৩০-২৫০, পাঙ্গাস ২০০, বোয়াল ৬৫০, হাইব্রিড কৈ ৩০০, দেশি কৈ ১০০০, শৈল ৭০০-৮০০, চাষের শিং ৫০০, দেশি শিং ৮০০, টেংরা ৮০০, চিংড়ি আকারভেদে ১২০০-১৩০০, প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার দু'শ ৫০ টাকা।

এএইচএ

আরো পড়ুন  

×