ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বদলির প্রভাবে উন্নয়ন

প্রকাশিত: ২০:৪০, ১ নভেম্বর ২০২০

বদলির প্রভাবে উন্নয়ন

বর্তমান সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনায় পুরো দেশকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাচ্ছে। গত এক যুগের নানা বৃহৎ প্রকল্পে বাংলাদেশ যে অবারিত গতিধারায় এগিয়ে যাচ্ছে তাও ক্রমান্বয়ে দৃশ্যমান হতে সময় লাগছে না। সরকারী কর্ম পরিকল্পনায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যাদের ধারাবাহিক কর্মতৎপরতায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এগিয়ে যায়, গতিশীল হয়ে শেষ অবধি গন্তব্যে পৌঁছায়। প্রতিটি কর্ম প্রকল্প বৃহৎ পরিধির মধ্যে তার দক্ষতা, সক্ষমতা ছাড়াও অর্থ ও সময় ব্যয়ের প্রতি সজাগ দৃষ্টির দাবি রাখে। যাতে স্বচ্ছ ও যথার্থ গতিশীলতায় আধুনিক বাংলাদেশ তৈরির পথ অবারিত হয়। তবে বাস্তব অবস্থাদৃষ্টে সিংহভাগ প্রকল্পই উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয় না। সময়ের মধ্যে তো হয়ই না, তার ওপর বরাদ্দ বাজেটও অতিক্রম করতে দেখা যায়। সঙ্গতকারণেই দীর্ঘসূত্রতার জালে আটকাপড়া কর্ম পরিকল্পনায় হরেক রকম দুর্ভোগও পোহাতে হয়। কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে শুরু করা উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের তীক্ষè নজরদারি এবং যথার্থ পরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে থাকে সংশ্লিষ্টদের কারণেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্ধতন কর্মকর্তারা স্ব স্ব অবস্থান থেকে অর্পিত কর্তব্য সম্পাদনে নিয়োজিত থাকে। তবে মাঝে মধ্যে বিপত্তিও ঘটে যায়। যেমন, সরকারী চাকরি মানেই বদলির প্রাসঙ্গিক রদবদল। তেমন অবস্থায় উন্নয়ন প্রকল্প তার ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখতে সমস্যার মুখোমুখি হয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসে যাতে সরকারী কর্মকর্তাদের বদলির প্রভাব উন্নয়ন কর্মধারায় যাতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে। কর্মকর্তা বদলির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্ম প্রকল্পও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে, যা চলমান উন্নয়নকে ব্যাহত করে দেয়। তেমন আশঙ্কাকে আমলে না নিয়ে এগিয়ে চলার গতিধারাকে অব্যাহত রাখতে পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প বাস্তবায়নে বদলির নেতিবাচক প্রভাবে যেন উন্নয়নের বহমান ধারা থেমে না যায়। নিয়ম অনুযায়ীই সরকারী কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এই বদলি ঠেকানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়। বেশিরভাগ ক্ষেতে সংশ্লিষ্টরা সফলকামও হন। এটাও কোনভাবে কাম্য হতে পারে না। এক জায়গায় বেশিদিন থাকায় কর্মক্ষেত্রের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়া অসম্ভব কিছু নয়। বদলির কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অন্য জায়গায় চলে গেলে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন প্রশিক্ষিত দক্ষ নতুন কর্মকর্তা, যিনি উন্নয়নকে তার ধারাবাহিক গতিতে এগিয়ে নেবেন। সারা বাংলাদেশে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের যে অব্যাহত অগ্রগতি, সেখানেও উদ্ভূত হরেক সমস্যার কথা স্মরণ করিয়ে দেন সরকারপ্রধান। যেমন, রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে কোথাও যেন পানির লাইন কাটা না পড়ে। নতুন সড়ক নির্মাণে পর্যাপ্ত সেতু এবং কালভার্টও তৈরি অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে হাওড় বাঁওড় অঞ্চলে রাস্তা বিনির্মাণে প্রাকৃতিক ভারসাম্য যাতে ব্যাহত না হয় সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন। আবার অনেক সময় মামলার কারণেও প্রকল্প বিলম্বিত হয়। সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট অধিদফতরকে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিও প্রকল্প বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সরকারী নির্দেশ ও পরামর্শকে আমলে নিয়ে গতিশীল উন্নয়ন প্রকল্পকে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া সময়ের দাবি। জনগণও তেমন প্রত্যাশাই করে।
×