ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

ডিসির প্রত্যাহার দাবিতে ‘অনড়’ আরিফ, অভিযানে ‘অনড়’ ডিসি

মোঃ এমদাদ হোসেন ভুঁইয়া, সিলেট

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ৫ জুলাই ২০২৫

ডিসির প্রত্যাহার দাবিতে ‘অনড়’ আরিফ, অভিযানে ‘অনড়’ ডিসি

ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যাহারের যে দাবি জানিয়েছেন, সে দাবিতে এখনও অনড় আছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। অপরদিকে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, আরিফুল হক কেন হঠাৎ এই দাবি জানিয়েছেন তা তিনি জানেন না।

গত বুধবার সকালে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করে ডিসি মুরাদকে প্রশাসনিকভাবে ‘অদক্ষ ও ব্যর্থ’ আখ্যা দিয়ে করে তার প্রত্যাহার দাবি করেন আরিফ।

ওই সমাবেশে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, স্টোন ক্রাশার মিলের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ, জালালাবাদ চক্ষু হাসপাতালের মার্কেট ভাঙা বন্ধসহ আরিফ বিভিন্ন দাবি জানালেও নিজের বক্তৃতার বেশিরভাগ অংশজুড়ে আরিফ মূলত জেলা প্রশাসকের প্রতি বিষোদ্গার করেন।

এ ব্যাপারে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বুধবারের সমাবেশের পর প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করছেন। তবে আমি ‘যেটা কইছি, কইছিই’ (যা বলছি, বলছিই)। এই ডিসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। তার কারণে সিলেটের সব মানুষ অতিষ্ঠ।’

এদিকে আরিফুল হক চৌধুরীর বুধবারের সমাবেশের বক্তব্য প্রসঙ্গে ডিসি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, তিনি কেন এমনটি বলেছেন তা আমি জানি না। এ ব্যাপারে তিনিই ভালো বলতে পারবেন। আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। সরকারের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতেই পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। পাথর উত্তোলন ও অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিনের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত আছে, আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। সরকারের কাজ নিজের গতিতেই চলবে।

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ‘কিছু বিষয় নিয়ে’ আরিফুল হক চৌধুরীর মনোমালিন্য ও দূরত্ব চলছে। এখন ইজারা বন্ধ থাকা সিলেটের পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাম্প্রতিক আন্দোলন এবং মেজরটিলা এলাকায় উচ্ছেদের শিকার ব্যবসায়ীদের ক্ষুব্ধতার সুযোগে আরিফুল হক ‘জেলা প্রশাসক হটাও’ কর্মসূচিতে নেমেছেন। সব সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন।

সমাবেশ চলাকালে আরিফুল হক বলেন, সম্প্রতি কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই জেলার বিভিন্ন স্থানে পাথর ভাঙার যন্ত্রের (ক্রাশার মেশিন) ব্যবসায়ীদের বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। কোনো ধরনের সময় কিংবা নোটিশ না দিয়ে নগরের মেজরটিলা এলাকায় রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদও করা হয়েছে। ডিসি এই অঞ্চলের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নষ্ট করছেন। তাই ভুক্তভোগী বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।

রাকিব

×