ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

দেশীয় জাত সংরক্ষণ করতে পারলে প্রাণিসম্পদ নামকরণ স্বার্থক হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা 

প্রকাশিত: ২১:২০, ১৩ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:২১, ১৩ মে ২০২৫

দেশীয় জাত সংরক্ষণ করতে পারলে প্রাণিসম্পদ নামকরণ স্বার্থক হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা 

দেশীয় জাত সংরক্ষণ করতে পারলে প্রাণিসম্পদ নামকরণ স্বার্থক হবে। সিমেন (বীজ) এখন ব্যবসার পর্যায়ে চলে গেছে যা খুবই দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। 

তিনি বলেন, ‘গরুর দেশীয় জাত হারানোর বিনিময়ে আমাদের আধুনিক জাত দরকার নাই। দেশীয় জাত রক্ষা করে আমরা যেন দুধ ও মাংস উৎপাদন করতে পারি, সেলক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’ তাই শুধু মুনাফার জন্য নয়, দেশের প্রয়োজনে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। মঙ্গলবার (১৩ মে) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘দেশীয় গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন: চ্যালেঞ্জ ও অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহবান জানান। 

সেমিনারে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশীয় জাতের গবাদিপশু হারিয়ে যাচ্ছে কথাটা ঠিক নয়। উন্নত জাতের কথা বলে বিদেশি নানা জাত আনা হয়েছে। বলা হয়েছে ফ্রিজিয়ান আর ক্রসবিট ছাড়া উপায় নাই-এটা মূলত: প্রশ্নবিদ্ধ কথা। দেশীয় গরু হারিয়ে যাওয়া ঠেকাতে হবে। এটা ঠেকানোর জন্য আমরা একটা রোডম্যাপ নিতে পারি যা খুবই জরুরি। আমরা বিদেশি নানা জাত নিয়ে আসছি, ওটা টেকসই না। এর পেছনে নানা সময় শ্রম ব্যয় করছি কিন্তু তা টিকছে না। বিদেশি জাত যারা প্রমোট করেছেন; তারা দেশীয় গরুর জাতের বিষয়ে নেগেটিভ কথা বলেছেন। এখন বলছেন, খামারিরা কিছু বুঝে না। দেশীয় জাত সংরক্ষণ করতে পারলে প্রাণিসম্পদ নামকরণ স্বার্থক হবে। সিমেন (বীজ) এখন ব্যবসার পর্যায়ে চলে গেছে যা খুবই দুঃখজনক।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, দেশের এক অঞ্চলের মানুষের সাথে অন্য অঞ্চলের মিল নাই; এমনকি খাওয়া-দাওয়া স্বভাবে মিল নেই। আমরা মানুষেরা জোনে ভাগ হয়ে আছি। তাহলে প্রাণিরাও তাই, আল্লাহর সৃষ্টি। জোন ভিত্তিক দেশীয় গরুর জাত সংরক্ষণে আমাদের প্রকল্প নিতেই হবে। দেশীয় জাত পালনে আমরা প্রণোদনা দিচ্ছি না কেন। দেশীয় জাত পালনে এই সুবিধা দেওয়া হলে কৃষকেরা অবশ্যই দেশীয় জাত পালন করবে।

সেমিনারে অংশগ্রহনকারী বিশেষজ্ঞগণ বলেন, স্থানীয় গবাদিপশুর জিনগত বৈচিত্র্য আমাদের একটি জিন ব্যাংক বা জিনগত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। এই জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলো ভবিষ্যতের গবাদিপশু উন্নয়নে কাজ করে থাকে। তারা আরো বলেন, বিশেষ করে তাপ সহনশীল, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী, প্রতিবছর বাচ্চা দেওয়ার প্রবণতা থাকে এমন গবাদিপশু  উৎপাদনশীল ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত প্রজনন কৌশল। যেখানে স্থানীয় জাতকে সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রজননের উপযোগী জাত উন্নয়নে সহায়ক হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন বিভাগ আয়োজিত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের  অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাকিলা ফারুক। এতে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মোঃ বয়জার রহমান। স্বাগত বক্তৃতাদেন কৃত্রিম প্রজনন দপ্তরের পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহজামান খান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃত্রিম প্রজনন দপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ সফিকুর রহমান। সেমিনারে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

শিহাব

×