
ছবি: সংগৃহীত
গাঢ়সবুজে ঘেরা ঐতিহাসিকস্থাপত্য আর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাগেরহাটে সংযোজিত হলো নতুন পালক। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন কর্তৃক নির্মিত অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত 'পর্যটন মোটেল এ্যান্ড ইয়ুথ ইন'-এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব নাসিমুল গনি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরীন জাহান নাম ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এই পর্যটন মোটেলের শুভ উদ্বোধন করেন।পর্যটন শিল্পের বিকাশে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করার পর দেশব্যাপী পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় বাগেরহাটের রণবিজয়পুরে এই 'পর্যটন মোটেল এ্যান্ড ইয়ুথ ইন' নির্মিত হয়েছে।
২০১৭ সালে সরকারি অনুদানে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ২০২৪ সালের জুন মাসে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।বাগেরহাট শুধু দুটি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদই নয়, বরং অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক। এই অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং এখানে আসা পর্যটকদের, বিশেষ করে খান জাহান আলীর মাজারে আগমনকারী অগণিত ভক্ত ও অনুসারীদের আবাসন ও খাবারের সুবিধা নিশ্চিত করতে বাগেরহাট শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে খান জাহান আলীর মাজারের প্রধান ফটকের কাছে বাপকের ৩২ শতাংশ জমিতে এই আধুনিক মোটেলটি নির্মিত হয়েছে।
প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই মোটেলটিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও সাধারণ কক্ষ, শিক্ষার্থীদের জন্য সাশ্রয়ী ডরমেটরি, আধুনিক রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল, দ্রুতগতির লিফট, বার-বি-কিউ এবং স্যুভেনিয়ার শপের মতো আধুনিক সব সুবিধা বিদ্যমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরীন জাহান, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মিজ শাহিন সুলতানা, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ, সাবেক সচিব ডঃ ফরিদুল ইসলাম, সাবেক সচিব ডঃ মোশারেফ হোসেনসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এই নতুন পর্যটন মোটেলটি বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।মোটেলটির অনলাইনে উদ্বোধন শেষে প্রধান আতিথির বক্তৃতায় স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সম্মানিত সিনিয়র সচিব জনাব নাসিমল গনি বলেন, বানিজ্যিকভাবে মোটেলটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে এবং এখানকার পর্যটন সম্ভবনাকে কাজে লাগিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে। দেশের জিডিপিতে পর্যটন শিল্পের অবদান আরওবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে মোটেলটি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মিজ নাসরীন জাহান বলেন, মোটেলটি সফলভাবে পরিচালনা করা গেলে বাগেরহাট অঞ্চলে আগত ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক আবাসন ও খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।তিনি আরো বলেন, এছাড়া মোটেলটি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে নিঃসন্দেহে। তিনি বলেন, এই আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন মোটেলটি শুধু পর্যটকদের জন্য নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নে, কর্মসংস্থানে, এবং বাগেরহাটকে একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আলীম