
অধ্যাপক আলী রীয়াজ
রাষ্ট্র পুনর্গঠন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছাড় দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
শনিবার ঢাকায় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (এনপিপি) আলোচনার শুরুতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে এনপিপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে, স্থানীয় নির্বাচন হবে না। নির্বাচিত সরকার স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এমন মন্তব্য করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট (এনপিপি)। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে এনপিপি ১১২টায় একমত, ২৬টায় একমত নয় এবং ২৮টায় আংশিক একমত হয়েছে।
আলোচনার সূচনায় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় আমাদের লক্ষ্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা। এই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা। জাতীয় স্বার্থে ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের বিষয়ে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় প্রতিটা দল ও জোট কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবে, আমরা সবাই এই প্রচেষ্টায় সমবেত হয়েছি।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা জাতি ও রাষ্ট্রের অগ্রসর হওয়ার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের এক জায়গায় আসতে হবে। তার অর্থ এই নয় যে, আমরা সব বিষয়ে একমত হতে পারব। কিন্তু যেসব বিষয় রাষ্ট্র বিনির্মাণে, পুনর্গঠন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজন; সেখানে আশা করি একমত হতে পারব।’
আলোচনায় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডা. সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম এন শাওন সাদিকী, কারী আবু তাহেরসহ প্রমুখ।
বৈঠক শেষে এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে এনপিপি ১১২টায় একমত, ২৬টায় একমত নয় এবং ২৮টায় আংশিক একমত হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পর সেই পার্লামেন্ট স্থানীয় নির্বাচন করবে। জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন একই সঙ্গে করা যায় কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনই বলেছে, বাংলাদেশে একসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব না।’
সংলাপে মানবিক করিডর নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে এনপিপি। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেনি। ফরিদুজ্জামান ফরহাদ আরও বলেন, দেশের সঙ্গে একটা বৈদেশিক চুক্তি হতে হলে একটা নির্বাচিত সরকারের পার্লামেন্ট সরকারকে করতে হবে। এটা অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।’ ফরিদুজ্জামান আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংসদ সদস্য দ্বারা হতে হবে। সংসদ সদস্যের বাইরে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সংসদ নির্বাচন, এটা একসঙ্গে করা যাবে না।’