মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী জেবুন্নেসা আক্তারকে দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপের দায়ে অভিযুক্ত ইমাম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী জেবুন্নেসা আক্তারকে দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ইমাম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মোট ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণখেলাপির একাধিক মামলা রয়েছে। গোল্ডেন ভিসা নিয়ে দুজনই বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরে দেওয়া আদেশে তাদের ফিরিয়ে আনতে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, নব্বইয়ের দশকে খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের বাজারের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতো মোহাম্মদ আলীর প্রতিষ্ঠান ইমাম ট্রেডার্স। পরে গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারণ হয় গার্মেন্টস, যন্ত্রপাতি আমদানিসহ নানা খাতে। একটি সূত্র জানায়, এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের বেশির ভাগটাই বিনিয়োগ করা হয়েছে জমি কেনায়।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, আদেশে বিচারক বলেছেন দেশের অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছেন মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী। একাধিক ব্যাংক তদন্ত করে তাদের বিদেশে অবস্থানের বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামে ১৫টি মামলা রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণখেলাপের অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছে। ১০ বছর আইনি লড়াই চালিয়েও ওই টাকা উদ্ধার করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এজন্য তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা জরুরি।
বিচারক মুজাহিদুর রহমান বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাচার করার মাধ্যমে এই ঋণখেলাপিরা রাষ্ট্রের ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছেন। দীর্ঘ এক যুগ ধরে এই শীর্ষ ঋণখেলাপিরা কোনো ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করার কারণে ব্যাংকের বিনিয়োগ খাতে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তিনি আদেশে আরও বলেন, নাগরিকদের আমানতের টাকা ঋণের নামে বিদেশে পাচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নাগরিকদের আমানতের অর্থ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বারাত