ফাইল ফটো
সাদিক এগ্রোর মোহাম্মদপুরের খামারের ‘১৫ লাখ টাকার খাসি’ এবারের কোরবানির ঈদের অন্যতম আলোচিত পশু। এই মুহূর্তে এর থেকেও বেশি আলোচনায় খাসিটির ছবিসহ ভাইরাল হওয়া যুবক মুশফিকুর রহমান ইফাতের বিষয়। গুঞ্জন উঠেছে, ওই যুবক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। কিন্তু মতিউর রহমান এ বিষয়ে অস্বীকৃতি জানান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমান বুধবার জানান, আমার এক ছেলে রয়েছে, তার নাম তৈাফিকুর রহমান। আলোচিত ইফাত আমার ছেলে নন। এমন কী আত্মীয় বা পরিচিতও নন। আমি তাকে কোনোদিন দেখিওনি।
শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অপ্রচারের প্রতিবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন যুবক মুশফিকুর রহমান ইফাত। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বয়স ১৯ বছর। আমি ছোট থেকেই পশুপাখি অনেক ভালোবাসি। আমি সাদিক এগ্রোতে গরু দেখার জন্য গিয়েছিলাম। সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান ভাই আমার পূর্ব পরিচিত। যেহেতু আমি পাখি পালি। তার কথামতো আমি ওই খাসির সঙ্গে ছবি তুলি। সবাইকে বলি, আমি খাসিটি কিনেছি। খাসিটি আমার কেনা হয়নি। খাসিটি আমার বাসায়ও আনা হয়নি এবং কোরবানিও দেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে সবাই জানতে পেরেছেন, খাসিটি আমার কেনা হয়নি এবং এটি এখনো সাদিক এগ্রোতে আছে।
এই যুবক আরো বলেন, এটার জন্য আমার ফ্যামিলি নিয়ে অনেক কথা-বার্তা হয়। আমার কারণে আমার পরিবারকে অনেক ছোট হতে হয়।
ইফাতের এমন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আরো সরগরম হয়েছে। নেটিজেনরা বলছেন, ইফাতের বাবার পরিচয় নিয়ে যখন সর্ব মহলে গুঞ্জন উঠেছে, তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে।
ঠিক সেই সময় মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইফতার তার ছেলে নন। এমন কী তার সঙ্গে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই। এর আগে কোনোদিন দেখাও হয়নি।
এ বিষয়ে ইফাত গণমাধ্যমে বলেছেন, তখন তার পরিচয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু তিনি তা পরিষ্কার করেননি। বরঞ্চ গণমাধ্যমকে তিনি জানান, খাসিকাণ্ডে তার পরিবার ছোট হচ্ছে। সেই পরিবার কারা তা নিয়ে ইফাত কোনো তথ্য দেননি এবং পরিচয় নিয়েও কিছু বলেননি।
এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ইফতা কি সত্যিই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে? যদি তা নাই হবে, তাহলে ইফাত কেন পরিবার নিয়ে কথা বলার সময় মতিউর রহমানকে নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি? যদি অন্য পরিবারের সন্তানই হবে, তাহলে কেন তা নিশ্চিত করেননি?
এমন পরিস্থিতে আরো প্রশ্ন উঠছে, ছেলেটি আসলে কার? এ নিয়ে অনেকে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে নিচ্ছেন আবার অনেকে আছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। তবে ইফাতের পরিচয় নিয়ে চলছে অনুসন্ধান।
এর আগে ইফাত খাসির জন্য এক লাখ টাকা বুকিং দিলেও নিতে আসেননি বলে দাবি করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত সাদিক অ্যাগ্রো। তারা জানায়, গত ১২ জুন ডেলিভারি নেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ক্রেতা ইফাতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি সাদিক অ্যাগ্রো কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান জানান, ইফাত নামের এক ক্রেতা আমাদের কাছ থেকে খাসিটি ১২ লাখ টাকায় কিনে নেন। আমরা খাসিটির দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিলাম। এক লাখ টাকা বুকিং দিয়েও তিনি খাসিটি আর নিতে আসেননি। সম্পূর্ণ টাকা আমাদের পরিশোধ করে খাসিটি নেয়ার কথা ছিল ১২ জুন। আমরা ১১ জুন রাত থেকে ওই ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমরা এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারিনি। আমরা এখনো তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সে ফোন ধরছে না।
সাদিক অ্যাগ্রো বিটল প্রজাতির ওই খাসিটির দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিল। পরে ওই ক্রেতার সঙ্গে ১২ লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তি হয়।
এসআর