ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বস্তি ফিরছে বাজারে

চিনি পেঁয়াজ সবজি মাছের দাম কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ৩১ মার্চ ২০২৩

চিনি পেঁয়াজ সবজি মাছের দাম  কমেছে

.

রমজানের সপ্তাহ পেরোতেই নিত্যপণ্যের দাম কমায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। দাম  আরও কমেছে ব্রয়লার মুরগির। বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২১০ টাকায়। ওই হিসেবে উচ্চ দামে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে প্রায় ৮০-১০০ টাকার মতো। ছাড়া ডিম চিনি, পেঁয়াজ, শাকসবজি মাছের দামও পড়তির দিকে। রোজার শুরুতে যে বেগুন কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বিক্রি হয়েছে সেই সমপরিমাণ বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। অর্থাৎ অর্ধেকে নেমে এসেছে ইফতার তৈরির অন্যতম সবজি বেগুনের দাম। লেবু, টমেটো শসার দামও কমেছে।  অন্যদিকে আদার দাম বাড়লেও আটা চালের দাম কমেছে। স্থিতিশীল রয়েছে ভোজ্যতেল, ছোলা মসুর ডালের দাম।

শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, খিলগাঁও সিটি করপোরেশন রেলগেট কাঁচাবাজার, গোড়ান কাঁচাবাজার মালিবাগ রেলগেট কাঁচাবাজার থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ছাড়া সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ঢাকা মহানগরীর খুচরা বাজার দর  সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার নিত্যপণ্যের বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম কমেছে। রমজানের সপ্তাহখানেক বাদে বেশিরভাগ পণ্যের দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে নিত্যপণ্যের বাজারে। বিশেষ করে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম কমায় বাজারের অস্থিরতা  দূর হয়েছে। ২০০ টাকার নিচে নেমে এসেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এর আগে রোজার শুরুতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৬০-২৮০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছিল। তবে এই মুরগির যে দামে বিক্রি হচ্ছে এর চেয়ে কমদামে বিক্রি হলে খামারিরা লোকসান করবেন বলে মনে করছে ভোক্তা অধিদপ্তর। শুক্রবার কাওরান বাজারে পরিদর্শনে গিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, মুরগির দাম খুব বেশি কমলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বর্তমানে খামারে মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকার মধ্যে। আমরা চাই উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছিল মুরগির দাম ১৯০  থেকে ১৯৫ টাকা পড়বে। তা হলে খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২১০ টাকা দাম পড়তে পারে। অর্থাৎ বলা যায়, ব্রয়লার মুরগির বাজার এখন স্থিতিশীল রয়েছে।

ছাড়া সোনালি কক জাতীয় মুরগির দামও কমেছে। তবে গরু খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। সব ধরনের মাছের দাম কমতির দিকে। ছাড়া ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। খোলা চিনিতে - টাকা কমলেও প্যাকেট চিনি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। ছোলার দাম কমে ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দাম কমে দেশী পেঁয়াজ ৩৫-৪০, রসুন ৯০-১৫০, দাম বেড়ে প্রতি কেজি আদা ১৪০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। অন্যদিকে ইফতার তৈরির অন্যতম অনুসর্গ বেগুনের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৬০, টমেটো ৩০-৫০, শসা ৫০-৬০, লেবু হালি ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাহিদা কমায় অন্যান্য সবজির দামও কম। খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার থেকে নিত্যপণ্যের কেনাকাটা করছিলেন শাজাহান পুরের বাসিন্দা নওশের আলী। তিনি জানান, মাছ-মাংসসহ সবজির দাম কমায় বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ক্রেতারা কিছুটা কম দামে এখন কেনাকাটা করতে পারছেন। তিনি বলেন, রোজার শুরুতে যেভাবে দাম বাড়ানো হয়ের্ছিল সেই অবস্থা এখন বাজারে নেই। জিনিসপত্রের দাম কমা স্বস্তির বিষয়। ওই বাজারের মুদিপণ্যের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, এখন বেশিরভাগ পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারি মার্কেটে সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে নতুন করে আর কোনো পণ্যের দাম বাড়তে পারেনি। তিনি বলেন, চাল আটার মতো পণ্যের দামও কমে গেছে।

ছাড়া ছোলার দাম পড়তির দিকে। সরবরাহ ঠিক থাকলে ভোগ্য নিত্যপণ্যের দাম আর বাড়বে না। এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রচুর মাছ এসেছে। যে কারণে দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। যতদিন যাবে মাছের চাহিদা কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে মাঝারি মানের রুই, কাতলা, মৃগেল কার্ফু মাছ ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহও রয়েছে। আকার সাইজ ভেদে প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

×