ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাসে ই-টিকিট সেবায় যাত্রীদের স্বস্তি

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত: ১৩:৪৩, ১৩ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৩:৪৮, ১৩ নভেম্বর ২০২২

বাসে ই-টিকিট সেবায় যাত্রীদের স্বস্তি

ই-টিকিট 

রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ বিশেষ করে মিরপুরের প্রায় সব বাসে ই-টিকিটিং সেবা চালু হয়েছে। ফলে সরকার নির্ধারিত ভাড়া দিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করছেন যাত্রীরা। ই-টিকিটের চালুর ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের আর কোনো অভিযোগ থাকবেনা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে যাত্রীদের সঙ্গে ড্রাইভার ও হেলপারদের অশোভনীয় আচরণ কমে আসবে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ থেকে মিরপুরের প্রায় বাসেই ই-টিকিট এর সেবা চালু করা হয়েছে। এতে বাসের হেলপাররা আগে যে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে, তার থেকে কম ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ফার্মগেট আসতে আগে নেয়া হতো ২০ টাকা, কিন্তু ই-টিকিটে ওই ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১৭ টাকা। এছাড়া কাজীপাড়া থেকে আগারগাঁও এর মধ্যের যাত্রীদের থেকে ফার্মগেট নেয়া হতো ২০ টাকা, কিন্তু এখন ই-টিকিটের কারণে নেয়া হচ্ছে ১৩-১০ টাকা। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মৌচাক নেয়া হতো  ৩০-৩৫ টাকা, কিন্তু এখন নেয়া হচ্ছে ২৫ টাকা। আর এভাবেই বিআরটিএ থেকে করা নির্ধারিত ভাড়া ই-টিকিটের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে। 

নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিঝুম আক্তার জনকণ্ঠকে বলেন, বাস ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে হেলপারদের একটা খারাপ আচরণ সব সময়ে দেখা যায়। সরকার যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে তা তারা মানতেই চায় না। ই-টিকিটের কারণে এখন স্বস্তি মনে হচ্ছে। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে না।

মিরপুর থেকে মতিঝিলের যাত্রী শরিফুল ইসলাম বলেন, ই-টিকিটের কারণে আমরা সঠিক ভাড়া দিতে পারছি। মিরপুর থেকে ৪০-৪৫ টাকা নেয়া হতো। কিন্তু এখন বিআরটিএ- এর চার্ট অনুযায়ী ভাড়া নিচ্ছে। তবে বাসের সংকট রয়েছে। 

জেসমিন সুলতানা নামের আরেক যাত্রী বলেন, এতোদিন বাসের ড্রাইভার ও হেলপাররা আমাদের জিম্মি করে রেখেছিল। এখন সঠিক ভাড়া দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।   

এদিকে, ই-টিকিটিং সেবা নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগও। মাসখানেক আগে চালু হওয়া প্রজাপতি, পরিস্থান ও মিরপুর লিংক পরিবহনে বেশকিছু অনিয়ম দেখা গেছে। টিকিটের যাত্রীদের না নিয়ে অতিরিক্ত লাভের আশায় টিকিট ছাড়া যাত্রী উঠাচ্ছে হেলপাররা। কাউন্টার ছাড়াও পথে পথে যাত্রী উঠানো হচ্ছে। 

অপরদিকে, ই-টিকিটিং সেবার স্থায়িত্ব নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে ড্রাইভার ও হেলপাররা। কারণ, এতে অনেকটাই বাড়তি আয়ের পথ কমে গেছে তাদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশকয়েকজন গণপরিবহন শ্রমিক বলেন, ই-টিকিটিং বেশি দিন চলবে না। মালিকরাই কিছুদিন পর এটা বন্ধ করে দিবে। কারণ, এতে তাদের লাভ কম। তারা আমাদের বলে এক কথা আর সবার সামনে বলে আরেক কথা। 

ই-টিকিট সেবার জন্য পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। এ জন্য তাদের পক্ষ থেকে তিনটি ০১৬১৮৯৩৩৫৩১, ০১৬১৮৯৩৬১৮৫ ও ০১৮৭০১৪৬৪২২ হটলাইন নাম্বার দেওয়া হয়েছে। 

ই-টিকিট সেবা চালুর আগে বাস মালিকদের দোহাই দিয়ে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে কর্কশ ও অশোভনীয় আচরণ করতেন বাসের হেলপাররা। এমনকি রাজধানীতে চলন্ত বাস থেকে যাত্রীদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ায় আহত ও নিহতের ঘটনাও ঘটেছে।    

এর আগে কয়েক দফায় জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়। ফলে দফায় দফায় বাড়ে বাস ভাড়াও। আর তা নিয়েই যাত্রী ও বাস শ্রমিকদের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকতো। সর্বশেষ গত ৬ আগস্ট মহানগরে প্রতি কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা এবং দূরপাল্লার বাসে কিলোমিটার প্রতি ৪০ পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়।

এমএইচ

×