ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্কে পার্শ্ব অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

নিরাপদ বাসস্থান প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার

খবর বাসসর

প্রকাশিত: ০২:২২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিরাপদ বাসস্থান প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন একটি নিরাপদ ও উপযুক্ত বাসস্থান প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। তিনি গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, গৃহহীনতা সত্যিই একটি অভিশাপ। এটি উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, এই অভিশাপ দূর করার বিষয়টি আমাদের সামর্থ্যরে মধ্যেই রয়েছে। এখানে সমবেত হওয়া আমাদের সকল বন্ধু ও অংশীদারগণ এর বাস্তবায়নে একটি দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে বুধবার ‘টেকসই ও সাশ্রয়ী আবাসন’ বিষয়ক একটি পার্শ্ব অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে এসব কথা বলেন। খবর বাসসর।
শেখ হাসিনা বলেন, নিউ আরবান এজেন্ডা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দরকারি নীলনক্সা প্রদান করে। এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তাকারী দেশগুলোতে আমাদের অবশ্যই ইউএন হাবিট্যাটসকে সমর্থন দিতে হবে। বাংলাদেশ এই বিষয়গুলোকে সামনে আনতে নিউইয়র্কে বন্ধুমহলের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। আসুন আমরা এমন একটি বিশ্বের জন্যে কাজ চালিয়ে যাই যেখানে গৃহহীনতা অতীতের বিষয় হয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ষোল কোটির একটি জনবহুল দেশ হয়েও বাংলাদেশ গৃহহীনতার বিষয়টি সফলভাবে সমাধান করতে পেরেছে। আমরা গৃহহীন-ভূমিহীন লোকজনকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর দিয়েছি। আমি আজ এখানে এসেছি সারাদেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্যে টেকসই ঘর নির্মাণে আমার সাফল্যের অভিজ্ঞতাগুলো বিনিময় করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উন্নয়নের অগ্রাধিকার হিসেবে ভূমিহীন, গৃহহীন ও শিকড়হীন মানুষকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। জাতির পিতার স্বপ্নের কথা বিবেচনা করে ১৯৯৭ সালে তার সরকার ‘আশ্রয়ণ’ নামে একটি প্রকল্প চালু করে-যার অর্থ ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের জন্যে আবাসন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত দুই দশকে তার সরকার সকলের জন্যে বিনা মূল্যে আবাসন নিশ্চিত করতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বাংলাদেশের এই কাভারেজ এলাকা কেবল নগরে নয়, দেশের প্রতিটি গ্রাম, শহর, জেলা, দ্বীপ ও পার্বত্য  অঞ্চলে রয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই প্রচেষ্টা আরও ব্যাপকভাবে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। কেবল গত দু’বছরেই ২ লাখ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে প্রায় ১০ লাখ লোকের আশ্রয় জুটেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ১৮ বছরে আমার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে আমরা ৫ লাখেরও বেশি ঘরে ৩৫ লাখ গৃহহীন লোকের থাকার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া বর্তমানে আরও ৪০ হাজার ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবার ৪শ’ স্কয়ার ফিট আয়তনের দুই বেডরুম, একটি লম্বা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি স্যানিটারি ল্যাট্রিনসহ ইটের তৈরি একটি বাড়ির মালিকানা পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যেক বাড়িতে বিনামূল্যে বিদ্যুত সংযোগ ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করছি। আমরা বিনামূল্যে বসতবাড়িসহ বাড়ি ও জমি প্রদান করছি যা ইতিহাসে অনন্য। এসব বাড়ির সুবিধাভোগীরা হলেন, ভূমিহীন-গৃহহীন, ভিক্ষুক, দিনমজুর, নিঃস্ব নারী, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ব্যক্তি, পারিবারিক সহিংসতার শিকার হওয়া ব্যক্তি, জাতিগত সংখ্যালঘু, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, কুষ্ঠরোগী, ঝাড়ুদার এবং তথাকথিত নি¤œবর্ণের হরিজন সম্প্রদায়।
তিনি আরও বলেন, তারা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকেও সহায়তা দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে আমরা কক্সবাজারে ১৩৯টি বহুতল ভবনে ৫ হাজার জলবায়ু-শরণার্থী পরিবারকে থাকার ব্যবস্থা করেছি। আগে কর্মসংস্থান ও থাকার জন্যে শহরগুলোতে গৃহহীন লোকের ছুটে আসার দৃশ্য অতি পরিচিত ছিল।
কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে এই প্রবণতা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, এই সকল লোক নিজস্ব এলাকাতেই এখন স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের মডেল অনুসরণ করছি। এই মডেল একজন পুনর্বাসিত ব্যক্তিকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে আত্মনির্ভরশীল এবং স্ব-মর্যাদাপূর্ণ করার জন্যে একটি সামগ্রিক পদ্ধতি নিশ্চিত করে। প্রকল্পটি স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের জন্যে জমি ও বাড়ির সমান মালিকানা নিশ্চিত করে। বাসস্থান দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা এবং এটি অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা পূরণের সুযোগ সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন মালওয়াইয়ের প্রেসিডেন্ট ড. লাজারাস ম্যাককার্থি চাকভেরা, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী সঞ্জয় ভার্মা, জাতিসংঘে স্লোভাক প্রজাতন্ত্রের স্থায়ী প্রতিনিধি মিশেল ম্লিনার এবং আইএলও’র মহাপরিচালক গাই রাইডার।

সঙ্কট-মন্দা মোকাবেলায় ‘বিশ্ব সংহতি’ চান প্রধানমন্ত্রী
এদিকে বাংলানিউজ জানায়, করোনা মহামারীর ধকল কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় বৈশ্বিক সঙ্কট ও অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যা মোকাবেলায় দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং বৈশ্বিক সংহতির ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্কট ও মন্দা থেকে উত্তরণে ৫টি প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থবিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গঠিত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের তৈরি প্ল্যাটফর্ম ‘চ্যাম্পিয়নস গ্রুপ অব গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স (জিসিআরজি)’ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘের মহাসচিবের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চলমান এ সঙ্কট এককভাবে কোন দেশের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এ মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং বৈশ্বিক সংহতি।
ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে চলমান বিপর্যয়ের একটি গ্রহণযোগ্য সমাপ্তি টানতে উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা গোটা বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষ করে যুদ্ধরত, উন্নয়নশীল এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সঠিক নীতি গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, এজন্য অন্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতেও আমরা প্রস্তুত। আন্তোনিও গুতেরেসের উদ্যোগে শীঘ্রই একটি পারস্পরিক সমাধান নিয়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নিউইয়র্কে ব্যস্ত দিন কাটালেন প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংবাদদাতা  জানান, জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরের প্রথমদিনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের প্রথম দিনেই কয়েকটি সভা, সেমিনার ও অধিবেশনের পাশাপাশি সাইডলাইনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগদান করেন তিনি। এবারের সাধারণ অধিবেশনে তিন হ্যাভিওয়েট নেতা যোগ দিচ্ছেন না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশেষ কারণে অধিবেশনে যোগ দেবেন না। তাদের প্রতিনিধিরা অধিবেশনে যোগ দেবেন।
প্রথমদিন সকালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ সময় বাংলাদেশে কক্সবাজার ও ভাষানচরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ইউএনএইচসিআর-এর বর্তমান কার্যক্রমসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর কারিম খান কিউসি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মধ্যে সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। মিয়ানমারে নৃশংস নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের পক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলমান সকল প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। আইসিসি প্রসিকিউটর এ সময় আবারও বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিকেলে জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনের সভাপতি সাবা করোসির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের নারী নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সভা পরিচালনা করেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট কাতালিন নোভাক, আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জ্যাকোবসডটারসহ সামোয়া, উগান্ডা, আরুবা, সেন্ট মার্টেনের প্রধানমন্ত্রী।
পরে ইউএন হ্যাবিট্যাটের নির্বাহী পরিচালক মায়মুনাহ মোহাম্মদ শরীফ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এসময় টেকসই নগরায়ণের গুরুত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও ভবিষ্যত সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়।
জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সফরসঙ্গীসহ লন্ডন থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে নিউইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না বিশ্বের তিন হেভিওয়েট নেতা ॥ জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না বিশ্বের তিন হেভিওয়েট নেতা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশেষ কারণে অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না। তাদের পরিবর্তে মন্ত্রীরা অধিবেশনে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ না দিলেও রাশিয়া এবং চীনের প্রেসিডেন্ট গত সপ্তাহে  বৈঠক করেছেন। বিগত কয়েক বছরও তারা অধিবেশনে যোগ দেননি। বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে একটির নেতৃত্ব দেন নরেন্দ্র মোদি। তিনিও ব্যক্তিগভাবে যোগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তার পরিবর্তে প্রতিনিধিত্ব করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর।
নিরাপত্তার কারণে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে পারছেন না যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে জাতিসংঘে তার রেকর্ডকৃত ভাষণ প্রচার করা হবে।
নিষেধাজ্ঞা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যাসÑ মোমেন ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অভিযোগের সুরে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা দেয়াটা যুক্তরাষ্ট্রের একটা অভ্যাস। কোন কারণ ছাড়াই র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাবের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছি এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি। র‌্যাবের কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক সময় সারাদেশে একই সঙ্গে ৪৯৫টি স্থানে বোমা হামলা হয়েছিল, বিচারকের এজলাস, বিদেশী রাষ্ট্রদূতের ওপরও বোমা হামলা হয়েছে। সারাদেশে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার কারণে দেশ সন্ত্রামুক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে হোটেল লটে প্যালেসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্কে পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
র‌্যাব কর্মকর্তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোন সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যাপার। সরকারের পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাওয়া হলেও তারা কোন কারণ জানাতে পারেনি। পৃথিবীর বহু দেশে বহু মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে বলেও জানান তিনি।
সীমান্তে মিয়ানমানের গুলি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তে দুটি দলের মধ্যে মারামারি হচ্ছে। সেখান থেকে নোম্যানস ল্যান্ডে মাঝে মাঝে দু’একটি গুলি চলে আসছে। এটা বাংলাদেশীদের টার্গেট করে গুলি করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আমরা প্রতিবাদ করেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে তারা অঙ্গীকার করেছে। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত সিল করে দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আর কোন রোহিঙ্গা ঢুকতে পারবে না। সীমান্ত পাহারা অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশে ঢুকতে না পেরে চীনে যাচ্ছে।

×