
হিন্দু পরিবারের জমি দখলে সংঘবদ্ধ হামলার অভিযোগে
বাগেরহাটে জমি দখলে নিতে ভোররাতে সুশান্ত দাস (৩৮) নামের এক শিক্ষকের বাড়িতে সংঘবদ্ধ হামলা ও বেপরোয়া মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। জীবন বাঁচাতে ওই শিক্ষক ৯৯৯-এ ফোন করেন। এ ছাড়া হামলার শিকার শিক্ষক পরিবারের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে হামলাকারীদের মধ্যে ১২ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে ওই শিক্ষক মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ আটক ১২ জনকে গ্রেফতার করে।
হামলাকারীদের মারধরে সুশান্ত দাস, তার অন্তঃসত্ত্ব¡া স্ত্রী কনিকা দাস (২৮), ভাই বিশ্বজিত দাস ও শুকদেব দাস, রিংকি দাস আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সুশান্ত দাস ও কনিকা দাসকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটকরা হলেন- আছাদুজ্জামান ওরফে টিপু হাওলাদার (৪৫), বেনজীর আহমেদ (৪৯), ফেরদাউস হাওলাদার (৩৩), নূর নবী (২১), হাফিজ হাওলাদার (৪০), আবু হানিফ খান (৩৬), মোঃ সাকিব ফকির (২০), সাফায়েত মোল্লা (৪১), মাহতাব খান (২৩), আব্দুল গাফফার শেখ (৪৪), মোতালেব খান (৬০), শামীম শেখ (১৯)। আসামিদের বাড়ি বাগেরহাটের কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
আহত শিক্ষক সুশান্ত দাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পৈত্রিক বাড়িতে বসবাস করে আসছি। কিন্তু আছাদুজ্জামান ওরফে টিপু হাওলাদার কয়েক বছর ধরে আমাকে জমি থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে। এর অংশ হিসেবে ২০১৬ সালে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুন্যালে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করেন। সেই মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার ভোররাতে হঠাৎ করে আছাদুজ্জামান ওরফে টিপু হাওলাদারের নেতৃত্বে ১৯-২০ জনের একটি দল ঘুমন্ত অবস্থায় আমাদের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় আমি, আমার স্ত্রীসহ পাঁচজন রক্তাক্ত আহত হয়েছি।
হামলাকারীরা ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বেশকিছু মূল্যবান মালামাল নিয়ে গেছে। তখন নিরুপায় হয়ে আমরা ৯৯৯-এ কল করি এবং চিৎকার দিতে থাকি।
আছাদুজ্জামান কেন জমি দাবি করে এমন প্রশ্নে সুশান্ত দাস বলেন, সদর উপজেলার চুলকাঠি এলাকার বাসিন্দা আমার মামা মৃত অরুণ দে নাকি তাকে আমাদের ৫৫ শতক জমির পাওয়ার দিয়ে গেছেন। সেই কারণে আছাদুজ্জামান এই জমি দাবি করেন। কিন্তু আমার বসতবাড়ির মধ্যে মামা অরুণ দের কোন জমি নেই। তাই পাওয়ার দেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে এসপি মহোদয়ের নির্দেশে আমরা তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে আমরা ১২ জনকে আটক করি। এই হামলার ঘটনায় ওই শিক্ষক আটক ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।