ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অটোমেশনে যাচ্ছে ডিএনসিসি

ঘরে বসেই হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ৩০ আগস্ট ২০২০

ঘরে বসেই হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন

মশিউর রহমান খান ॥ ঘরে বসেই ডিএনসিসির নাগরিকগণ তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান ও ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন। এমনকি দেশের বাইরে থেকেও সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব শাখা সংশ্লিষ্ট সকল সমস্যার সমাধান করতে পারবে। বিদেশে বসেও আপীল আবেদন প্রদান, নির্ধারিত ফি জমা, এ সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ প্রদান বা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। কোন সমস্যা হলে অতিদ্রুতই মিলবে এ সংক্রান্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি। এজন্য দেয়া লাগবে না কোন অতিরিক্ত ফি। একই সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকগণ সকল প্রকার ফি বা কর অনলাইনে প্রদান ও তার রশিদ সংগ্রহ করতে পারবেন। এমনই এক অনলাইনভিত্তিক রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের দিকে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। আগামী ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকেই এমন অটোমেশন কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। ফলে রাজস্ব সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম হবে অনলাইনেই। শুধু তাই নয়, সংস্থাটি তার সীমানার কোন বাড়ি,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ছোটবড় যে কোন প্রকারের দোকানকেই ট্যাক্সের বাইরে রাখবে না। সকল প্রকার হোল্ডিংকে করের আওতায় আনতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকেই মাসব্যাপী একটানা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিরুনি অভিযানে নামছে। করের পরিমাণ না বাড়িয়েই এবার করের পরিধি বাড়াতে চায় ডিএনসিসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জন করে অধিক পরিমাণ নাগরিক সেবা প্রদান ও জনদুর্ভোগ লাঘব করতে উন্নয়ন কর্মকা- করে তা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে এমন অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। তবে অভিযানের লক্ষ্য Ñকোনক্রমেই নাগরিকদের প্রদত্ত কর বৃদ্ধি না করে করের পরিধি বাড়াতে (ট্যাক্স নেট) পদ্ধতি অবলম্বন করবে। পরীক্ষামূলকভাবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ডিএনসিসির অঞ্চল-২ (মিরপুর) এবং অঞ্চল-৫ (কাওরানবাজার) এর সকল ওয়ার্ডে মাসব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু হবে। প্রথম পর্বের অভিযান শেষে ১৫ দিন পর সকল ওয়ার্ডে একসঙ্গে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে মিরপুর-২ অঞ্চল ও কারওয়ানবাজার এলাকায় হোল্ডিং বৃদ্ধির হার বেশি হওয়ায় এ দুটি ওয়ার্ডকে অভিযানের আওতায় আনা হয়েছে। অভিযানে উপকর কর্মকর্তাসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে পূর্বেও কোন্ কোন্ স্থানে হোল্ডিং ছিল ও বর্তমানে কোন্ স্থানে ও কতটি হোল্ডিং ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পেয়েছে তা নির্ধারণ করবে। একই সঙ্গে ব্যবসার ক্যাটাগরি ও কোন্ ক্যাটাগরিতে কত টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স ধরা যাবে তা নিরূপণ করার কাজ করবেন। পরবর্তীতে অভিযানের পর পরই ডিএনসিসির দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় এনে নির্দিষ্ট হারে কর প্রদানের জন্য চিঠি প্রদান করবে। রাজস্ব শাখা সূত্র জানায়, চিরুনি অভিযানে পূর্বের এসেসমেন্টের পর নতুন করে কতটি হোল্ডিং উক্ত স্থানে বৃদ্ধি পেয়েছে তা যাচাই করবে। একই সঙ্গে কোন ব্যক্তি যাতে হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি দিতে না পারেন সে জন্য বাড়ির মালিককে ভবন বা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুত বিল, পানির বিল বা যে কোন প্রকার সেবা গ্রহণের কাগজ দেখে উক্ত তারিখ থেকেই হোল্ডিং ট্যাক্স বা ট্রেড লাইসেন্স ফি ধার্য করবে। কর না দিয়ে কোন ব্যক্তি আবাসিক স্থাপনায় থাকবেন বা ব্যবসা পরিচালনা করবেন; তা বন্ধ করতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে ডিএনসিসি এলাকায় মোট ২ লাখ ৪০ হাজার হোল্ডিং রয়েছে। অপরদিকে নতুন যুক্ত হওয়া এলাকাগুলোতে কমপক্ষে ৫০ হাজারের বেশি হোল্ডিং রয়েছে বলে ধারণা কর্তৃপক্ষের। নতুন এসেসমেন্ট অনুযায়ী ডিএনসিসির পুরনো এলাকায় নতুন কমপক্ষে ৬০ হাজার হোল্ডিং বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করছে ডিএনসিসি। অপরদিকে নতুন এলাকার শুধু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ দৃশ্যমান হোল্ডিং জরিপ করবে। অপরদিকে কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে এলে তাও গ্রহণ করবে। করোনা মহামারীর কারণে বর্তমানে ডিএনসিসির রাজস্ব আয় তলানীতে ঠেকেছে। নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের আগে রাজস্ব শাখায় জমানো অর্থ থেকে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হতো। অপরদিকে প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন তাদেও হোল্ডিং অনুযায়ী ও জনগণের বসবাসের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ীই প্রতি বছরের সেবা প্রদানের কর্মসূচী এমনকি রাস্তাঘাট, স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর বাইরে সকল প্রকার নাগরিক সেবাদানকারী প্রকল্পও হোল্ডিংয়ের ভিত্তিতেই পরিচালনা করা হয়। কিন্তু রাজধানীতে অতি দ্রুততার সঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসা-বাড়ি স্থাপন ও বিভিন্ন প্রকার স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু পূর্বের হোল্ডিং অনুযায়ী সকল প্রকার কার্যক্রম পরিচালনা করায় হিসাবের বাইরে বাড়তি জনসংখ্যার জন্য রাস্তাঘাটে চলাচল করাসহ সকল প্রকার ইউটিলিটি সার্ভিস প্রদান করা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে অনেকটা কষ্ট হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ডিএনসিসি রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ্যাসেসমেন্ট করা ও সেই অনুযায়ী পরবর্তী অর্থবছরের বাজেটে তদনুযায়ী সঠিক নাগরিক সেবা প্রদান করতে চায়। সূত্র মতে, বর্তমানে ডিএনসিসির রাজস্ব শাখার কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কি পরিমাণ হোল্ডিং বৃদ্ধি পেয়েছে তার সঠিক হিসাব জানেন না। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ঢাকা সিটি ২ ভাগ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোন হোল্ডিং নতুন করে রি-এ্যাসেসমেন্ট করা হয়নি। একই সঙ্গে মাত্র কয়েক বছর আগে যে স্থানে একটি দোতলা বা একটি হোল্ডিং ছিল বর্তমানে তা চাহিদার প্রেক্ষিতে বহুতল ভবন বা অসংখ্য হোল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু নাগরিক আবার স্বেচ্ছায় নতুন তথ্য প্রদান করে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করছে। ফলে একদিকে নাগরিকগণ যেমন কর প্রদান করছেন না অপরদিকে রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায় ডিএনসিসির পক্ষে সঠিক সেবা প্রদান করাও সম্ভব হচ্ছে না। জানা গেছে, অনলাইনে রাজস্ব শাখার কাজ করতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি পাইলট প্রকল্প পরিচালিত হয় ডিএনসিসিতে। ২০১৬ সাল থেকে ’১৮ সাল পর্যন্ত চলমান এ প্রকল্প এটিএন আরকে সফটওয়ারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক পরিচালনা করে। বর্তমানে অনলাইনে শুধু ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি প্রদান করতে পারে। নতুন পদ্ধতিটি কার্যকর হলে এমন সকল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে অনলাইন পদ্ধতিতেই সকল কাজ করবে ডিএনসিসি। পাইলট প্রকল্পের সফলতার পর এবার নিজেরাই রাজস্ব আহরণে চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করে সকল প্রকার রাজস্ব আদায় করতে চায়। সেজন্য ডিএনসিসি তাদের রাজস্ব শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান করবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে মানুষের ঘরে বসেই সকল প্রকার ট্যাক্স ও ফি প্রদান করতে পারা উচিত। তাই ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নগরবাসী ডিএনসিসির সকল ধরনের হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি ও অন্যান্য ট্যাক্স ঘরে বসে অনলাইনে দিতে পারবেন, কাউকে ডিএনসিসির আঞ্চলিক অফিসে যেতে হবে না। আমরা পুরো রাজস্ব ব্যবস্থাকেই অটোমেশনের দিকে নিয়ে যাচ্ছি। এ সংক্রান্ত যে কোন প্রকার অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন যা দ্রুত নিষ্পত্তিও করা হবে। এর ফলে যে কোন নাগরিক বিদেশে বসেও ক্রেডিট কার্ড বা বিভিন্ন গেটওয়ে ব্যবহার করে এ সংক্রান্ত ফি জমা দিতে পারবেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। মেয়র আতিক বলেন, ঢাকা শহর দুই ভাগে ভাগ হওয়ার পর কোন রকম হোল্ডিং রি-এ্যাসেসমেন্ট করা হয়নি। ফলে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও হোল্ডিং তৈরি হলেও আমাদের কাছে তার সঠিক হিসাব না থাকায় সে অনুযায়ী আমরা তাদেরকে পুরোপুরি নাগরিক সেবা প্রদান করতে পারছি না। অপরদিকে রাজস্ব আয় থেকেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। ফলে সেবা প্রদানসহ সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকা- করাও অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে করের পরিধি বাড়াতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে আমাদের মিরপুর ও কাওরানবাজার জোনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিরুনি অভিযান শুরু করব। মাসব্যাপী এ অভিযান চলবে ও ডিএনসিসির সকল স্থাপনাকে করের আওতায় আনব। পরবর্তীতে ডিএনসিসির অন্যান্য অঞ্চলেও এ চিরুনি অভিযান পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, চিরুনি অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে ট্যাক্স না বাড়িয়ে, ট্যাক্সের নেট বাড়ানো। মোট রাজস্ব বৃদ্ধি পেলে নাগরিক সেবার মান আরও উন্নত করা যাবে। এছাড়া করের পরিধি বাড়ানো, বাদ পড়া হোল্ডিং বা প্রতিষ্ঠানকে করের আওতাভুক্ত করা, রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা, রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং জনসাধারণকে পৌরকর প্রদানে উৎসাহ প্রদান করা। মেয়র বলেন, চিরুনি অভিযানে কর বহির্ভূত বাড়ি-ঘর বা স্থাপনাকে এবং নতুন সৃষ্ট ফ্ল্যাট বা বাড়ি-ঘর কিংবা স্থাপনা করের আওতায় আনা হবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা ও আইনসম্মতভাবে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স দ্বারা পরিচালিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা ও নবায়নের আওতায় আনা হবে। চিরুনি অভিযান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আহবায়ক এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরকে যুগ্ম আহবায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। যারা একজন উপকর কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। অভিযানের উদ্দেশ্য পূরণ করতে তিনি সকল নাগরিকের সর্বোচ্চ সহায়তা কামনা করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী জনকণ্ঠকে বলেন,আমরা রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রাজস্ব আদায় বা যে কোন প্রকার ফি প্রদানের জন্য বিশেষ নির্দেশ দিয়েছি। এতে করে কোন প্রকার কষ্ট ছাড়াই যাতে নাগরিকগণ ঘরে বসে সরকারের সেবা পেতে পারেন। এরই অংশ হিসেবে ডিএনসিসি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকেই অটোমেশন পদ্ধতিতে যাচ্ছে। ফলে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফিসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম অনলাইনে প্রদান করতে পারবেন। একই সঙ্গে দীর্ঘবছর রাজধানীতে বাড়ির মালিকগণ বাড়ি তৈরি করলেও সেই অনুপাতে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করছে না। তাই রাজস্ব আয় কম হওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমও সম্পন্ন করতে পারছে না। মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে এরই অংশ হিসেবে রাজস্ব আয় বাড়াতেই ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
×