স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদা আদায় চক্র। কৌশলে ডেকে নিয়ে নারীর সঙ্গে ছবি তোলা বা মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ।
রাজশাহী নগরে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এ ধরনের চাঁদাবাজির ঘটনা। তাদের টার্গেট বহিরাগত শিক্ষার্থী, পেশাজীবী বা বেড়াতে আসা যুবকরা। গত দুইদিনে একটি ঘটনায় তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অপর ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পুলিশ যাওয়ার আগেই পালিয়ে যায়। রাজশাহী নগরের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের চাঁদাবাজ চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যাদের বেশির ভাগ স্থানীয় বখাটে বা মাদকাসক্ত যুবক। জানা গেছে, সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের বিনোদপুর এলাকায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি করা হয়। বিনোদপুর বাজারের ব্যতিক্রম লাইব্রেরির সামনে একটি দোতলা ভবনে ওই শিক্ষার্থীদের আটকে রেখে মাদক কারবারি বলে তাদের মারধর করে স্থানীয় কয়েক যুবক। এরপর তাদের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তারা কেড়ে নেয় তাদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ। তারা পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে।
তবে খবর পয়ে সেখানে পুলিশ পৌঁছার আগেই তারা পালিয়ে যায়। এর আগে নগরের বিসিক এলাকা থেকে কয়েল তৈরি কারখানার কর্মচারী এক যুবককে কৌশলে নগরের শালবাগান পাওয়ার হাউস মোড় এলাকায় ডেকে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে এক নারীর সঙ্গে ছবি তুলে প্রথমে তার কাছে ২০ হাজার ও পরে খুন করার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। শেখ জসিম উদ্দিন নামের ওই যুবকের পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ২০ হাজার ও পরে ৩৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে। শেখ জসিম উদ্দিনের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থানার শেখ পাড়ায়। পরে বিষয়টি তার বড় ভাই জাহিদুর রহমান পুলিশকে জানালে সোমবার রাতে শাহমুখদুম থানা পুলিশ জসিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে। মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বলেন, গোয়ালন্দ থানা পুলিশের মাধ্যমে তারা বিষয়টি অবহিত হয়। এরপর রাতেই অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধারসহ চাঁদাবাজ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলো, শালবাগান পাওয়ার হাউস মোড় এলাকার কাকলী বেগম (৩২), তার স্বামী বিপ্লব উদ্দিন (৩৫) ও তাদের সহযোগী শরিফুল ইসলাম (২২)। তাদের গ্রেফতারের সময় নগদ ৩০ হাজার টাকা ও চারটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজ চক্র কৌশল পরিবর্তন করে বহিরাগত লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করছে।
পুলিশ তাদের ধরতে সক্রিয় রয়েছে। কেউ বিকাশের মাধ্যমে টাকা চাইলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।