স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান আজিজ আহমেদকে জেনারেলের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দিয়েছেন বিমান ও নৌবাহিনী প্রধান। মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নৌবাহিনী প্রধান এ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত তাকে এই র্যাংক ব্যাজ পরান। জেনারেলের র্যাংক ব্যাজ পরানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সেনাপ্রধানকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদও এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখনই তার দল সশস্ত্রবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমাদের সরকার সেনাবাহিনীকে উন্নত ও আধুনিক একটি বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সুইপার, ক্লিনার ও বারবার-এর মতো নিম্নতম পদগুলো যুগোপযোগী করতে পদবি পরিবর্তন করেছে।
র্যাংক ব্যাজ পড়ানোর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মাদ জয়নুল আবেদীন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৮ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদকে সেনাবাহিনীপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ওই দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক গেজেটে বলা হয়, আজিজ আহমেদকে জেনারেল পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। তিনি ২৫ জুন বিকাল থেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর সোমবার পূর্বসূরি জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝে নেন নতুন সেনাপ্রধান।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালকের পক্ষে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম শাম্মী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, র্যাংক ব্যাজ পরিধানের পর সেনাবহিনীপ্রধান শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সশস্ত্রবাহিনীর বীর সদস্যদের ম্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়। সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।
১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশন পাওয়া আজিজ আহমেদ তার দীর্ঘ চাকরি জীবনে ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির মহাপরিচালক, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং আর্মি ট্রেনিং এ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড ও সেনাসদরের কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন অবজারভার হিসেবে ইরাক, কুয়েত ও সুদানে ফোর্স কমান্ডারের মিলিটারি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিজিবির পুনর্গঠন ও উন্নয়নমূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এই সেনা কর্মকর্তা রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পেয়েছেন বিজিবিএম ও পিজিবিএম পদক।
১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তাঁর পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুরে। তার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা।