ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দুবাইয়ের পর কলকাতা বইমেলায় তাসমিম সুলতানার ২ উপন্যাস 

স্টাফ রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ১৪:২৮, ৩ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৪:৩৪, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

দুবাইয়ের পর কলকাতা বইমেলায় তাসমিম সুলতানার ২ উপন্যাস 

লেখক তাসমিম সুলতানার প্রকাশিত দু’টি উপন্যাস 

করোনা মহামারী কাটিয়ে দীর্ঘ দুই বছর পর কলকাতায় দশমবারের মতো শুরু হয়েছে বাংলাদেশ বইমেলা। 

বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি ঢাকার সম্মিলিত উদ্যোগে চলতি বছর এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে কলকাতার বইপাড়া বলে পরিচিত কলেজ স্ট্রিটের কলেজ স্কয়ার প্রাঙ্গণে। স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা অবধি ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।  

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজরুল ইসলাম, কলকতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনা আন্দালিব ইলিয়াস-সহ বিশিষ্টরা।

 

তাসমিম সুলতানার উপন্যাস ঝরাপাতা

কলকাতায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ বই মেলায় থাকছে লেখক ও সাংবাদিক তাসমিম সুলতানার দুটি উপন্যাস। উপন্যাস ২টি  হলো- বর্ণহীন স্বপ্ন এবং ঝরাপাতা। উপন্যাস ২টি প্রকাশ করেছেন দি রয়েল পাবলিশার্স। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। এছাড়াও দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনে উপন্যাস ২টি  সংগ্রহ করা যাবে। বই ২টির অনলাইন পরিবেশক রকমারি.কম।

লেখকের উপন্যাস বর্ণহীন স্বপ্ন

এ ব্যাপারে লেখক তাসমিম সুলতানা বলেন, দেশের বাইরে অনুষ্ঠিত বইমেলায় আমার দুটি বই থাকবে এটা খুবই আনন্দের খবর। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে  অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বইমেলায় আমার বই দুটি ছিল। একজন লেখকের জন্য এটা গর্বের। 

দি রয়েল পাবলিশার্স এর প্রকাশক মো: জামাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ দুই বছর পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর এবছরও পরপর দুবার তারিখ পরিবর্তনের পর শেষ পর্যন্ত কলকাতার কলেজ স্কয়ারে ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা উদ্বোধন হলো। প্রথম দিন থেকেই মেলায় পাঠকের যথেষ্ঠ ভীড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। মেলা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলার পরিবেশ বেশ সুন্দর। বইমেলায় লেখক তাসমিম সুলতানার দুটি উপন্যাস থাকছে। এছাড়াও বিখ্যাত লেখকদের বই থাকছে। 

কলকাতা বইমেলায় পাঠক তার পছন্দের মানুষকে লেখকের ঝরাপাতা উপন্যাসটি কিনে উপহার দিচ্ছেন

কলকাতা বইমেলায় অংশগ্রহন করেছেন  দি রয়েল পাবলিশার্সসহ ৭৭টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এই  বইমেলায় রয়েল পাবলিশার্সের কর্ণধার মো: জামাল উদ্দিন প্রতিনিধি হিসেবে কলকাতায় উপস্থিত আছেন। 

দুবাই বইমেলায় দি রয়েল পাবলিশার্স এর স্টলে তাসমিম সুলতানার উপন্যাস ঝরাপাতা 

প্রতিবারের মতো এ বছরও বাংলাদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা, প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৬৮টি স্টলে, ৭৭টি বাংলাদেশি প্রকাশনার বই কলকাতার পাঠকদের কাছে হাজির করা হয়েছে। 

কলকাতা বইমেলায় দি রয়েল পাবলিশার্স এর স্টলে তাসমিম সুলতানার ঝরাপাতা

আয়োজকদের মতে, কলকাতার বইপাড়া এমন একটা অঞ্চল যেখানে নিত্যদিন ভিড় লেগে থাকে। একদিকে যেমন গোটা বাংলার পাইকারি ও খুচরা বইয়ের বাজার এই কলেজ স্ট্রিট, অপরদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কলেজ স্ট্রিটে। এছাড়া বাড়তি পাওনা কফি হাউসের আড্ডাপ্রেমীদের জমায়েত। ফলে কলেজ স্ট্রিট মানে বাংলাদেশ বইমেলার বাড়তি প্রচার। সেটাই আসল উদ্দেশ্য।

কলকাতা বইমেলায় দি রয়েল পাবলিশার্স এর স্টল

একসময় বাংলায়, বাংলাদেশি বইয়ে প্রাপ্তিস্থান ছিল কলকাতা বইমেলায়। পরবর্তীতে পাঠক সমাবেশ ও পত্রভারতীর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশি বইয়ের স্থায়ী ঠিকানা হয় কলকাতার কলেজস্ট্রীটে। তারই মাঝামাঝি বাংলাদেশি বইয়ের পসরা নিয়ে ২০১১ সালে কলকাতায় পথচলা শুরু ‘বাংলাদেশ বইমেলা’। শুরু থেকে ৩ বছর গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় বইমেলাটি হয়। তবে শুরু হলেও নির্দিষ্টস্থানে মেলাটিকে ধরে রাখা যায়নি। পরবর্তিতে ৪ বছর মেলা হয় রবীন্দ্রসদনের খোলা প্রাঙ্গনে। এরপর রবীন্দ্রসদন চত্বর ঘুরে ৩ বছর বাংলাদেশ বইমেলা হয়ে আসছিল রবীন্দ্রসদনের পশ্চিম পাশে মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। ২০১৯ সালে, শেষবার সেখানেই হয়েছিল। চলতি বছর ফের স্থান পরিবর্তন করে চলে এলো কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে। অয়োজকদের অভিমত, কলেজ স্ট্রীটের, কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণ-ই হবে বাংলাদেশ বইমেলার স্থায়ী ঠিকানা।

দুবাই বইমেলায় দি রয়েল পাবলিশার্স এর স্টলে তাসমিম সুলতানার উপন্যাস বর্ণহীন স্বপ্ন

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজারুল ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলার মূল উদ্দেশ্য শুধু ব্যবসায়িক নয়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করা। এরসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যাতে বাংলাদেশের খ্যাতনামা লেখক-কবিদের সঙ্গে উদীয়মান লেখদেরও চিনতে পারাটাই বাংলাদেশ বইমেলার মূল উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে, ৯ম বাংলাদেশ বইমেলা হয়েছিল মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। সেবার মোট ৮০টি প্রকাশনা অংশ নিয়েছিল। ৮ম বারে ছিল ৬৯টি এবং ৭ম’বারে ছিল ৪৭টি বাংলাদেশি প্রকাশনা।  
 

 
×