
আধুনিক জীবনযাত্রায় সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার অঙ্গ হিসেবে অনেকেই নিয়মিত বডি স্প্রে, পারফিউম বা ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করেন। বিশেষ করে ঘামজনিত গন্ধ (body odor) ঢাকতেই এসব পণ্য জনপ্রিয়। তবে প্রশ্ন হল—এসব জিনিস ব্যবহার করা শরীরের পক্ষে আদৌ ভালো কি? এর কী কী উপকার ও অপকার রয়েছে?
বডি ওডর আসলে কী? ঘাম নিজে কোনও গন্ধ সৃষ্টি করে না। কিন্তু যখন এটি ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে যায়, তখনই দুর্গন্ধ হয়। এই ঘামের দুর্গন্ধকে ঢাকতে বা কমাতে ডিওডোরেন্ট ও বডি স্প্রে ব্যবহার করা হয়।
বডি স্প্রে ব্যবহারের কিছু উপকারিতা:
১. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: নিয়মিত ঘামের গন্ধ থাকলে অনেকেই অস্বস্তিতে ভোগেন। একটি ভাল গন্ধ আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
২. সৌন্দর্যের অংশ: সুগন্ধি শরীরের পরিচ্ছন্নতা ও আভিজাত্যের পরিচায়ক হয়ে দাঁড়ায়।
৩. কিছু ডিওডোরেন্ট ব্যাকটেরিয়া নাশ করে: বিশেষ কিছু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ডিওডোরেন্ট ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমায়, ফলে দুর্গন্ধও কমে।
কিন্তু বডি স্প্রের কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে:
১. ত্বকে অ্যালার্জি বা র্যাশ: অনেক বডি স্প্রেতে অ্যালকোহল, পারাবেন, ফ্র্যাগরেন্স কেমিক্যাল থাকে, যা সংবেদনশীল ত্বকে চুলকানি, র্যাশ বা লালচে দাগ তৈরি করতে পারে।
২. শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা: স্প্রে করার সময় কণা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, যা নাকে বা ফুসফুসে গেলে অ্যাজমা বা ব্রঙ্কাইটিস রোগীদের সমস্যা হতে পারে।
৩. হরমোনে প্রভাব: কিছু সুগন্ধিতে থাকা ‘ফথ্যালেটস’ নামক রাসায়নিক শরীরের হরমোন ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে (বিশেষত নিয়মিত ব্যবহার করলে)।
৪. লিভার বা কিডনির উপর প্রভাব: দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত ব্যবহারে দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
নিরাপদ ব্যবহারের টিপস: বডি স্প্রে সরাসরি ত্বকে না দিয়ে জামার ওপর লাগান।
মুখের কাছাকাছি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
বাচ্চাদের ও গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যবহার বর্জন করুন।
প্রাকৃতিক বা অ্যালকোহল-ফ্রি ডিওডোরেন্ট বেছে নিন।
বডি স্প্রে বা ওডোরেন্ট ব্যবহার একেবারে খারাপ নয়, তবে নিয়ম মেনে ও সচেতনভাবে ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চললে এবং নিরাপদ পণ্য বেছে নিলে আপনি সুগন্ধি ও স্বাস্থ্য—দুটিই বজায় রাখতে পারবেন।
সজিব