গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভেতরে ব্যাপক আপত্তি থাকলেও, নেতানিয়াহু নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, চলতি সপ্তাহেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনার অনুমোদন চাইবেন। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, গাজা দখলের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।
নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওয়াইনেট-কে বলেন, আমরা গাজা পুরোপুরি দখল করতে যাচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত বদলাবে না। জিম্মিদের যেখানে আটকে রাখা হয়েছে, সেসব এলাকায়ও অভিযান চলবে। সেনাপ্রধান যদি এতে সম্মত না হন, তাহলে তার উচিত পদত্যাগ করা।
তবে এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির। তিনি মনে করেন, পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কঠিন এবং দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ।
আইডিএফ জানিয়েছে, গাজার ভেতরে হামাসের সুসংগঠিত অবকাঠামো রয়েছে। তাদের মতে, পুরো গাজা দখল করতে বহু বছর লাগতে পারে। এছাড়া, এই অভিযান জিম্মিদের জীবনকে আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
বর্তমানে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। নতুন পরিকল্পনায় বাকি অংশগুলোও দখলের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এর ফলে পুরো গাজা উপত্যকা ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বৈঠকে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে "গাজা দখল" শব্দ ব্যবহার করেছেন। তাদের মতে, আগের তুলনায় এবার আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
নেতানিয়াহুর এই ঘোষণায় নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে গাজায় থাকা লাখো বেসামরিক নাগরিক এবং মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ ধরনের অভিযান আরও রক্তপাত এবং ধ্বংস ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে সেনাবাহিনীকে গাজা যুদ্ধ নিয়ে পরবর্তী করণীয় জানাবেন। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, তিনি হয়তো সেনাবাহিনীকে অপেক্ষা করতে বলবেন, যাতে জিম্মিদের মুক্তির আলোচনাগুলো এগিয়ে নেয়া যায়।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
সজিব
