
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের ৬০০ জনেরও বেশি প্রাক্তন নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক শীর্ষ কর্মকর্তাএকযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধ বন্ধে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই বলপ্রয়োগে যা অর্জন করতে চেয়েছিল, তার প্রায় সবকিছুই অর্জিত হয়েছে। এখন আর যুদ্ধ নয়, বরং চুক্তির মাধ্যমেই বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।
এই আহ্বানপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মসাদের সাবেক প্রধান তামির পারদো, শিন বেতের সাবেক প্রধান আমি আয়ালন, এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান মাতান ভিলনাইসহ আরও অনেক প্রভাবশালী সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা। চিঠিতে তারা স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন: “জোর করে যা অর্জন সম্ভব, তা হয়ে গেছে। জিম্মিদের আর অপেক্ষা করার সময় নেই।”
চিঠির মূল বক্তব্যে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে হামাসের সামরিক কাঠামো ও শাসন ক্ষমতা ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি অসম্ভব; এখন কেবল আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব।
চিঠিটি এমন এক সময়ে প্রকাশ্যে এলো, যখন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো দুইজন অর্ধ-অনাহারী ইসরায়েলি জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওটি প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। গাজার দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বর্তমানে মারাত্মক অনাহার ও খাদ্যসংকটে রয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অবশ্য দাবি করেন, গাজায় প্যালেস্টাইনিদের অনাহার নয়, বরং জিম্মিরাই 'পদ্ধতিগত অনাহারে' রয়েছেন। পাল্টা জবাবে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জিম্মিরা জনগণের মতোই খাবার পাচ্ছেন বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।
ইসরায়েলি অভিযানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৬০,৮০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজার অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। পানীয় জল, খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয়ের চরম সংকটে রয়েছে গাজাবাসী। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি গণহত্যার মামলাও চলছে।
এই প্রেক্ষাপটে, ইসরায়েলের সাবেক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংগঠন Commanders for Israel’s Security (CIS) ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে লিখেছে, “এই মুহূর্তে এক বিরল সুযোগ রয়েছে গাজায় মৌলিক পরিবর্তন আনার। আমরা ট্রাম্পকে অনুরোধ করছি, এই যুদ্ধ থামাতে এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে তার প্রভাব কাজে লাগান। এটি সত্যের মুহূর্ত।”
তারা আরও বলেন, “আপনি (ট্রাম্প) লেবাননে পেরেছিলেন। এবার গাজায়ও করুন।”
মুমু ২