
পুরুষের শরীরের হরমোন ব্যালান্স ও দৈহিক সক্ষমতা (স্ট্যামিনা) ধরে রাখতে মাছের তেল বা ফিশ অয়েল কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মত দিয়েছেন পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্য গবেষকেরা। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছের তেলে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের টেস্টোস্টেরন উৎপাদনকে সহায়তা করে, যা পুরুষের প্রজননস্বাস্থ্য, পেশিশক্তি ও যৌনসক্ষমতার সঙ্গে জড়িত।
বর্তমান ব্যস্ত জীবনযাত্রায় ক্লান্তি, মানসিক চাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও যৌন দুর্বলতা অনেক পুরুষের জন্যই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ সামান্য সচেতনতা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব—আর তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো মাছের তেল বা ফিশ অয়েল।
চলুন জেনে নিই মাছের তেলের ১১টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উপকারিতা—
১. টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করে
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়, যা পুরুষত্ব বজায় রাখতে সহায়ক।
২. যৌন ক্ষমতা ও স্পার্ম কোয়ালিটি উন্নত করে
গবেষণায় প্রমাণিত, মাছের তেল নিয়মিত সেবনে স্পার্ম কাউন্ট, মোটিলিটি ও কোয়ালিটি বৃদ্ধি পায়।
৩. স্ট্যামিনা ও শক্তি বাড়ায়
অ্যানার্জি লেভেল ও স্ট্যামিনা বৃদ্ধিতে মাছের তেল অসাধারণ ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন।
৪. হরমোন ব্যালান্স বজায় রাখে
শরীরের ইস্ট্রোজেন ও টেস্টোস্টেরনের ভারসাম্য রক্ষা করে, ফলে হরমোনাল সমস্যা দূর হয়।
৫. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমায়
মাছের তেল মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখতে সহায়তা করে, ফলে স্ট্রেস ও হতাশা দূর হয়।
৬. হৃদরোগ প্রতিরোধ করে
ওমেগা-৩ হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৭. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
ডিএইচএ মস্তিষ্কের নিউরোন অ্যাকটিভিটি বাড়িয়ে ফোকাস ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।
৮. জয়েন্ট ও হাড়ের গঠন মজবুত করে
মাছের তেলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য জয়েন্ট ব্যথা ও আর্থ্রাইটিস কমাতে সাহায্য করে।
৯. চুল ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
সঠিক হরমোন ব্যালান্সের মাধ্যমে চুল পড়ে যাওয়া ও ত্বকের রুক্ষতা কমায়।
১০. ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে
ওমেগা-৩ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভাইরাস ও ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা দেয়।
১১. ঘুমের মান উন্নত করে
মাছের তেলে থাকা উপাদান মেলাটোনিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়ায়, ফলে ঘুম হয় গভীর ও শান্তিপূর্ণ।
তবে অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলেন চিকিৎসকরা। রক্ত তরল করার ক্ষমতা থাকায় মাছের তেল সাপ্লিমেন্ট কিছু ওষুধের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটাতে পারে। হরমোন ব্যালান্স ও স্ট্যামিনা বজায় রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, ঘুম ও সুষম খাদ্যের পাশাপাশি মাছের তেল একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সানজানা