
মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের হোগলপাতিয়া এলাকায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৯ জুলাই) গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আক্তার বেপারী ও গিয়াসউদ্দিন বেপারীর বাড়িসহ চারটি বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। রবিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বিষয়টি গণমাধ্যমে অভিযোগ আকারে তুলে ধরেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আবুল হাওলাদার এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন। চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে গড়ে তুলেছেন একদল লাঠিয়াল বাহিনী। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদকারী আক্তার ও গিয়াসউদ্দিন বেপারীর পরিবারকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়।
সেদিন রাতে শামিম আকন, মিরাজ আকনসহ প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র ও হাতবোমা নিয়ে ওই বাড়িগুলোর ওপর চড়াও হয়। বাড়ির দরজা-জানালা ভেঙে ফেলে, ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। আতঙ্ক সৃষ্টি করতে একাধিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্ত আক্তার বেপারী বলেন, “আবুল চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ওরা অতর্কিতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে যা কিছু ছিল সব লুটে নেয়। বোমাও ফাটিয়েছে। আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।”
অন্যদিকে গিয়াসউদ্দিন বেপারীর স্ত্রী হাচিনা বেগম বলেন, “প্রথমে দলবেঁধে এসে বোমা ফাটায়। পরে সবাই দৌড়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচায়। এরপর শুরু হয় ভাঙচুর ও লুটপাট।”
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আবুল হাওলাদারের বক্তব্য জানতে তার বাড়িতে গেলে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তার মোবাইল ফোন নম্বরেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, “ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনও থানায় মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
শেখ ফরিদ