
শরীরচর্চা কিংবা দৈনন্দিন চলাফেরায় অনেকেই হাঁটাকে সবচেয়ে সহজ ও প্রাকৃতিক ব্যায়াম হিসেবে দেখে থাকেন । কিন্তু সঠিক ভঙ্গিমায় না হাঁটলে এই সাধারণ অভ্যাসটিও পেশি বা অস্থির ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর ও কার্যকরভাবে হাঁটার জন্য নিচের দিকনির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা জরুরি।
- সঠিকভাবে হাঁটার মূলভিত্তি হলো হিল-টু-টো রোল। মানে, প্রথমে পায়ের গোড়ালি দিয়ে মাটি স্পর্শ করুন, এরপর ধীরে ধীরে পায়ের সামনের অংশে ও আঙুলে ভার নিন এবং আঙুল দিয়ে সামনে ধাক্কা দিয়ে পা তুলুন। এতে করে হাঁটার ছন্দ মসৃণ হয় এবং অপ্রয়োজনীয় চাপ এড়ানো যায়।
- কোর বা পেটের পেশি সামান্য শক্ত করে রাখলে মেরুদণ্ড সোজা থাকে, শরীরের ভারসাম্য উন্নত হয় এবং হাঁটার সময় ক্লান্তি কম লাগে। এটি আপনাকে আরও স্থির এবং আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে হাঁটতে সাহায্য করে।
- হাঁটার সময় মাথা উঁচু রাখুন এবং চিবুক মাটির সমান্তরালে রাখুন। কাঁধ যেন উত্তোলিত বা কুঁচকে না থাকে—শিথিল ও প্রাকৃতিকভাবে ঝুলে থাকা উচিত। এতে করে ঘাড় ও পিঠের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে না।
- অনেকেই হাঁটার সময় কোমর অনেকটা সামনে ঠেলে দেন বা অতিরিক্ত পেছনে ঠেলে দেন। এভাবে পেলভিস টিল্ট হয়ে গেলে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক আকার ব্যাহত হয়। পেলভিস যেন neither টাক nor tuck হয়, বরং স্তরবিন্যাসে সোজা থাকে—সেটা নিশ্চিত করুন।
- হাঁটার সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন, যা শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং ক্লান্তি হ্রাস করে। এটি পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ায় ও মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- শুধু নিজের শরীর নয়, হাঁটার সময় চোখ ও মন খোলা রাখুন। সামনে-পেছনে কিংবা পাশের প্রতিবন্ধকতা, গর্ত, কিংবা চলন্ত যানবাহন সম্পর্কে সচেতন থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
- হাঁটার সময় হাঁটু যেন কখনো পুরোপুরি লক না হয়। সামান্য ভাঁজ রাখা অবস্থায় হাঁটলে চলন হয় স্বাভাবিক, এবং তা জয়েন্টের ওপর চাপ কমায়।
- হাঁটার ছন্দ যেন চট করে থেমে না যায় বা ঝাঁকুনি না খায়। পুরো পায়ের ব্যবহার করে প্রাকৃতিক, মসৃণ গতি বজায় রাখুন, যা হাঁটাকে সহজ ও আরামদায়ক করে তোলে।
প্রতিদিন ৩০ মিনিট সঠিক ভঙ্গিমায় হাঁটলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, মানসিক চাপ হ্রাস করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই শুধু হাঁটার অভ্যাস নয়—সঠিকভাবে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সানজানা