
প্রতিটি নারীর মনে থাকে একটুখানি ভালোবাসা, কিছুটা রোমান্স আর অন্তরঙ্গতার আশা। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, স্বামীটা সবদিকেই ভালো, শুধু রোমান্টিকতা নেই। এতে সম্পর্ক ধীরে ধীরে একঘেয়ে হয়ে যেতে পারে। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই—প্রেম জাগানোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় না। একটু চেষ্টা আর ইতিবাচক মানসিকতায় আপনি সম্পর্ককে রঙিন করে তুলতে পারেন।
রোমান্টিকতা কী সেটাই আগে বুঝতে দিন
অনেক পুরুষ জানেই না, ‘রোমান্টিক’ হতে ঠিক কী করতে হয়। তাই তারা চেষ্টাও করে না। আপনি খোলামেলা ভাষায় তাকে বুঝিয়ে দিন—কখন আপনি ভালোবাসা অনুভব করেন, কী করলে আপনি খুশি হন। যেমন: হঠাৎ করে ফুল আনা, একসাথে চা খাওয়া, কিংবা মাঝে মাঝে শুধু "ভালোবাসি" বলা। আপনার অনুভূতির গুরুত্ব তাকে জানান। অভিযোগ নয়, ভালোবাসা দিয়ে বোঝালে তিনি নিশ্চয়ই পরিবর্তন আনবেন।
নিজেই শুরু করুন ছোট ছোট রোমান্টিক উদ্যোগ
আপনি যদি সবসময় অপেক্ষায় থাকেন, তিনি কিছু করবেন, তাহলে হতাশাই বাড়বে। বরং নিজে থেকেই মাঝে মাঝে তাকে চমকে দিন। প্রিয় খাবার রান্না করুন, ছোট নোট লিখে বালিশের নিচে রাখুন, বা একটা হঠাৎ ডেট প্ল্যান করুন। এগুলো দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হবেন। অনেক সময় পুরুষরা ভালোবাসা প্রকাশ করতে জানে না, কিন্তু সেটা তারা শিখতে পারে—আপনার কাছ থেকেই।
তার পছন্দকে গুরুত্ব দিন
আপনি যদি চান তিনি আপনাকে গুরুত্ব দিক, তাহলে তাকেও বুঝতে দিন যে আপনি তার পছন্দ অপছন্দকে মূল্য দেন। তার শখ, পছন্দের খাবার, প্রিয় খেলা কিংবা পছন্দের পোশাক—এসব নিয়েও আগ্রহ দেখান। এতে তিনি অনুভব করবেন, আপনি তাকে বোঝেন। ধীরে ধীরে তিনি আপনাকেও বোঝার চেষ্টা করবেন। আর এখান থেকেই শুরু হবে একধরনের নরম সম্পর্কের পথচলা।
ভালোবাসার ভাষা খুঁজে বের করুন
প্রত্যেক মানুষের ভালোবাসা প্রকাশের ধরন ভিন্ন। কেউ কাজ দিয়ে ভালোবাসে, কেউ স্পর্শ দিয়ে, কেউ কথার মাধ্যমে। আপনার স্বামী কোন পথে ভালোবাসা প্রকাশ করেন, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। যখন বুঝবেন, তখন দেখবেন তিনি আসলে ভালোবাসেন, শুধু তা প্রকাশ করার ধরন আলাদা। রোমান্টিকতা মানেই শুধু মোমবাতি জ্বালানো নয়—তার নিজের ভালোবাসার ভাষাকেও আপনি মূল্য দিন।
তার আত্মবিশ্বাস বাড়ান
অনেক সময় স্বামীরা রোমান্টিক হতে ভয় পায়, কারণ তারা ভাবে এতে ‘মেয়ে-মেয়ে’ ভাব চলে আসে বা পরিবারে হাসাহাসি হয়। আপনি যদি তাকে সাহস ও নিরাপত্তা দেন, তবে সে নিজেকে প্রকাশ করতে পারবে। তাকে প্রশংসা করুন, ছোট ভালো কাজগুলোকেও বড় করে দেখান। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং আপনাকে খুশি করার নতুন পথ খুঁজবে। সম্পর্ক তখন ধীরে ধীরে হয়ে উঠবে নরম, স্নিগ্ধ ও হৃদয়ছোঁয়া।
প্রযুক্তির সাহায্য নিন
একটু মজার ছলে, ইউটিউব বা ফেসবুকে রোমান্টিক দম্পতিদের ছোট ভিডিও দেখান। অথবা তাকে মেসেঞ্জারে মাঝে মাঝে প্রেমভরা গান বা লেখা পাঠান। এতে তিনি অবচেতনভাবে বুঝতে পারবেন আপনি কী চান। কখনো কখনো সে নিজেই হাসতে হাসতে বলবে, "তুমি এসব আমাকে কেন দেখাও?"—এটাই শুরু। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করুন বন্ধুত্ব ও প্রেম বাড়াতে।
ধৈর্য ও ইতিবাচকতা ধরে রাখুন
পরিবর্তন একদিনে আসে না। আপনি যদি প্রতিদিন হতাশা, অভিযোগ আর তুলনা করেন, তবে সম্পর্ক আরও শুকিয়ে যাবে। ধৈর্য ধরুন, সময় দিন। কখনো নিজেই একটু কম আশা করে তাকে জায়গা দিন নিজেকে বদলানোর। আপনি যদি ইতিবাচক থাকেন, তাহলে তিনিও আপনার প্রতি আরও আগ্রহী হবেন। ভালোবাসার পথে এক ধাপ করে এগোতে হয়—লাফিয়ে নয়।
সব স্বামী-স্ত্রীর রসায়ন একরকম হয় না। কেউ প্রকাশে ভালো, কেউ অনুভবে। তাই স্বামী আনরোম্যান্টিক হলে সেটা সম্পর্কের শেষ নয়। বরং সেটা হতে পারে সম্পর্ককে নতুনভাবে গড়ার সুযোগ। ভালোবাসা দিলে, তা ফিরেই আসে—শুধু সময় আর আন্তরিকতার দরকার।
রাজু