ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভয়াবহ নতুন অস্ত্র বদলে দিচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের গতি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:৪০, ২৯ মে ২০২৫

ভয়াবহ নতুন অস্ত্র বদলে দিচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের গতি

ছবি: সংগৃহীত

রোদিনস্ক শহরের আকাশে ঝুলছে পুড়ে যাওয়া ধোঁয়ার তীব্র গন্ধ। শহরে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দেখা মেলে এর উৎসের ২৫০ কেজির একটি গ্লাইড বোমা শহরের প্রধান প্রশাসনিক ভবন ধ্বংস করেছে এবং আশেপাশের তিনটি আবাসিক ভবনকেও মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থলে আমাদের উপস্থিতির পরও ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া উঠছে। শহরের প্রান্তে গোলাবর্ষণের শব্দ ও গুলির আওয়াজ ভেসে আসে, ইউক্রেনীয় সেনারা ড্রোন ভূপাতিত করছে।

রোদিনস্ক, পোকরোভস্ক শহরের প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। গত বছর থেকে দক্ষিণ দিক দিয়ে রাশিয়া পোকরোভস্ক দখলের চেষ্টা চালিয়ে এলেও ইউক্রেনীয় বাহিনী এখন পর্যন্ত সেই চেষ্টা প্রতিহত করেছে। তাই কৌশল বদলেছে রাশিয়া এখন তারা শহর ঘিরে সরবরাহপথ কেটে দেওয়ার চেষ্টা করছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে যুদ্ধবিরতির কূটনৈতিক চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, রাশিয়া তাদের হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে এবং জানুয়ারির পর সবচেয়ে বড় অগ্রগতি সাধন করেছে।

রোদিনস্কে আসার কয়েক মিনিট পরই একটি রুশ ড্রোন আমাদের মাথার ওপর ভেসে ওঠে। টিমের সদস্যরা কাছের একটি গাছের আড়ালে আশ্রয় নেয়। হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ আরও একটি ড্রোন কাছাকাছি আঘাত করেছে। আমরা দ্রুত একশ ফুট দূরের পরিত্যক্ত একটি ভবনে ছুটে যাই।

এখন রোদিনস্কে রুশ ড্রোনের দাপট প্রমাণ করে তারা আগের চেয়ে অনেক কাছে এসে পজিশন নিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা পোকরোভস্ক থেকে কোস্ত্যান্তিনিভকা পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নবদখলকৃত অংশ থেকে এগোচ্ছে।

রোদিনস্ক থেকে দ্রুত বেরিয়ে আমরা চলে যাই বিলিটস্ক শহরে, যেখানে দেখা যায় রাত্রিকালীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এক সারি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। একটি ছিল ৬১ বছর বয়সী স্বেতলানার।

তিনি বলেন, “এখন অবস্থা আরও খারাপ। আগে দূরে বিস্ফোরণ শোনা যেত, এখন আমাদের শহরেই হচ্ছে।”

একটি নিরাপদ ঘাঁটিতে ৫ম অ্যাসল্ট ব্রিগেডের কামান ইউনিটের সদস্য সেরহি বলেন, “রুশ বাহিনীর আক্রমণ তীব্রতর হয়েছে। তারা রকেট, মর্টার, ড্রোন সব ব্যবহার করছে।” বর্তমানে নতুন হুমকির নাম ফাইবার অপটিক ড্রোন। এ ধরনের ড্রোন কন্ট্রোলারের সাথে ফাইবার কেবলের মাধ্যমে যুক্ত থাকে, তাই ইলেকট্রনিক সিগন্যাল ব্লক করা যায় না। ৬৮তম জায়েগার ব্রিগেডের ড্রোন ইঞ্জিনিয়ার ‘মডারেটর’ বলেন, “এই প্রযুক্তির কারণে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম আর কাজ করে না।”

পাইলট ভেনিয়া বলেন, “আমরা এখন হাস্যরস করে বলি, আমাদের হয়তো কাঁচি নিয়ে চলা উচিত যেন কেবল কেটে দেওয়া যায়।” এই ড্রোন ধীরগতি সম্পন্ন এবং গাছের সঙ্গে কেবল জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, কিন্তু তবুও রাশিয়ার বিপুল ব্যবহারের কারণে সেগুলো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। ৫ম অ্যাসল্ট ব্রিগেডের স্কাউট প্রধান সার্জেন্ট ওলেস বলেন, “ড্রোন আসার পর সৈন্যদের এক পজিশনে অনেক বেশি সময় থাকতে হচ্ছে।” ইনফ্যান্ট্রি সদস্য মাকসিম জানান, “আমরা একবার টানা ৩১ দিন পজিশনে ছিলাম, এমনও আছে যারা ৯০ থেকে ১২০ দিন ছিল।”

শহীদ

×