
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অসামরিক ও সামরিক সংযোগ পরিদপ্তরের কর্নেল স্টাফ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল মোহাম্মদ মঈনুল হক বলেছেন, ‘জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশ আস্থার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে।’
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাক্ষাৎকারে এই সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক সেনা সদস্য বছরের সবসময় প্রশিক্ষণের মধ্যে নিয়োজিত থাকে। আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্মত এবং প্রখ্যাত একটা ইনস্টিটিউশন আছে, যেটা হচ্ছে বিপসট (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউশন অফ পিস সাপোর্ট অপারেশন এন্ড ট্রেনিং) নামে পরিচিত।’
তিনি জানান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নেদারল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য কিছু দেশের যেসব ইউনিটগুলো জাতিসংঘে হাইয়েস্ট ট্রুপস কন্ট্রিবিউটিং কান্ট্রি, তারাও বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে এবং বাংলাদেশ থেকেও সেসব দেখে প্রশিক্ষক যাচ্ছে। সেখানে গিয়ে তাদের পিসকিপিং ইনস্টিটিউশনগুলাতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
কর্নেল মোহাম্মদ মঈনুল হক আরও বলেন, “বিপসটের অধীনেই আমরা বিভিন্ন রকম এক্সারসাইজ করে থাকি, যেমন-আমেরিকার সাথে ‘টাইগার লাইটনিং’, ভারতের সাথে ‘সম্প্রীতি’, নেপালে আমরা করেছি ‘শান্তি প্রয়াস’। এছাড়া বাংলাদেশ ‘শান্তির দূত’ এরেঞ্জ করেছে, বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল ফোর্স এসে আমাদের এখানে জয়েন করেছে। এক্সারসাইজ ‘শান্তির অগ্রসেনা’য় মাল্টিন্যাশনাল ফোর্স এসে বাংলাদেশে ইউএন (জাতিসংঘ) অটমোসফিয়ারে বা এনভাইরনমেন্টে এক্সারসাইজ করেছে।”
‘সবাই আমাদের কাছ থেকে শিখতে চায়’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই আস্থাটা অর্জন করেছি। আমাদের পেশাদারিত্ব, দক্ষতা এবং কর্তব্যপরায়ণতার পরিচয়, আমরা মানবিকতার যে পতাকা উড্ডয়ন করেছি, সেটাই মূলত আমাদেরকে সবার কাছে একটা রোল মডেল হিসেবে নিয়ে এসেছে। যার জন্য প্রতিটা দেশ থেকে সবসময় আমাদের কাছে ইন্সট্রাক্টর ফ্যাসিলিটিস চায়। মাঝেমধ্যে আমাদের এখানে ট্রেনিং করাতে চায়।’
কর্নেল মোহাম্মদ মঈনুল হক জানান, নেদারল্যান্ডস তাদের সেনা সদস্যদের বিপসটে প্রশিক্ষণ কোর্স করানোর জন্য পাঁচ বছরের চুক্তি করেছে। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অবশ্যই গৌরবের। আমি মনে করি যে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ফোর্স ওইভাবে গ্রাউন্ডে ডেপ্লয়েড থাকে না।’
মালি মিশনের অভিজ্ঞতা জানাতে তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি যেসব জায়গা সংকটপূর্ণ এলাকা, সবখানে তারা বাংলাদেশি ফোর্স মোতায়েন করতে পছন্দ করে। চাঁদ ব্যাটালিয়ান, ঘানা ব্যাটালিয়ান বা নাইজার ব্যাটালিয়ান বা যেসব ব্যাটালিয়ানই আছে তারা কখনোই বিভিন্ন সংকটপূর্ণ এলাকায় যেতে চায় না।’
কর্নেল মোহাম্মদ মঈনুল হক বলেন, “বাংলাদেশকে যেখানে বলা হয় এবং খুব সাফল্যের সহিত, পেশাদারিত্বের সহিত তারা জিনিসগুলোকে ট্যাকেল করে, দায়িত্ব পালনে পিছপা হয় না। তারা এক বাক্যে স্বীকার করে যে, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী যেখানে আছে, থিংস উইল বিকাম নরমাল এন্ড থিংস উলই বিকাম স্ট্যাবল’। আমি মনে করি এই ব্যাপারটা আস্থার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে জাতিসংঘের কাছে।”
রাকিব