
ছবি: সংগৃহীত
দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নারীর সমতা রক্ষায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে কন্যা সন্তান যেন আর বৈষম্যের শিকার না হন, সেই লক্ষ্যে ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ একটি নতুন আইন পাশের প্রস্তাব দিয়েছে এবং তার খসড়া প্রধান উপদেষ্টার নিকট জমা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, একজন পুত্র সন্তান যতটুকু সম্পত্তি পান, একজন কন্যা সন্তান পান তার অর্ধেক। উদাহরণস্বরূপ, কোনো পিতা ৯ শতাংশ সম্পত্তি রেখে গেলে এবং তিনি একজন পুত্র ও একজন কন্যা রেখে যান, সেই সম্পত্তি তিন ভাগে ভাগ হয়ে পুত্র সন্তান ৬ শতাংশ ও কন্যা সন্তান মাত্র ৩ শতাংশ পান।
কিন্তু নতুন সংস্কার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারী ও পুরুষ উভয়কেই সমান অধিকার দিতে হবে। অর্থাৎ, পুত্র সন্তান যদি ৫ শতাংশ সম্পত্তি পান, কন্যা সন্তানও পাবেন সমান ৫ শতাংশ। এতে করে কন্যা সন্তানের প্রতি প্রচলিত বৈষম্য দূর হবে এবং সমাজে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধানের নেতৃত্বে এই প্রস্তাবনায় আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
জাতীয় সংসদে নারী-পুরুষ সমানসংখ্যক আসন নির্ধারণের প্রস্তাব, যেখানে ৩০০ আসন থাকবে নারীদের জন্য।
গৃহকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি।
বাল্যবিবাহ রোধে ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর নির্ধারণ।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এই উদ্যোগকে “নারী ক্ষমতায়নের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এটি শুধু নারীদের অধিকার রক্ষার বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় উন্নয়ন কৌশল। এই সুপারিশগুলো বই আকারে প্রকাশ করে দেশের প্রতিটি মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৭০ শতাংশ সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সমাজে নারীরা উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে সমান অংশ পেয়ে পরিবার ও সমাজে মর্যাদা ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবেন।
আসিফ