ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ফরমুলা, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য কতটা জরুরি?

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৮:২৭, ৩০ মে ২০২৫

ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ফরমুলা, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য কতটা জরুরি?

 

 

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বহুল আলোচিত ‘থ্রি জিরো’ ফরমুলার মাধ্যমে একটি নতুন বিশ্ব গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। এই ফরমুলার লক্ষ্য—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নির্গমন।

বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসা ও টেকসই উন্নয়নের প্রবক্তা ড. ইউনূস মনে করেন, এই তিনটি ‘জিরো’ অর্জনের মাধ্যমেই একটি ন্যায্য, মানবিক ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব। আর এই ধারণা শুধু উন্নত বিশ্ব নয়, বরং বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই হতে পারে ভবিষ্যতের বড় পরিবর্তনের সূচনা।

 

 থ্রি জিরো ফরমুলা কী?

১. শূন্য দারিদ্র্য (Zero Poverty):
ড. ইউনূসের মতে, সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। দান নয়, বরং উদ্ভাবনী উপায়ে কর্মসংস্থান ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এই লক্ষ্য অর্জনের কৌশল।

২. শূন্য বেকারত্ব (Zero Unemployment):
তিনি মনে করেন, প্রতিটি মানুষ উদ্যোক্তা হতে পারে। চাকরি খোঁজার বদলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ধারণায় বিশ্বাসী ইউনূস বলেন, মাইক্রোক্রেডিট ও সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।

৩. শূন্য কার্বন নির্গমন (Zero Net Carbon Emission):
জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা মোকাবিলায় গ্রিন টেকনোলজি, নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। সামাজিক ব্যবসা মডেলের মাধ্যমেই পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব।

 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কতটা জরুরি?

বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে গ্রামীণ ও শহুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক ব্যবসা হতে পারে বিকল্প সমাধান। প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাজার হাজার তরুণ বের হলেও, তাদের একটি বড় অংশ কর্মসংস্থানের অভাবে হতাশ। এই অবস্থায় ‘উদ্যোক্তা হয়ে উঠো’ নীতিতে অনুপ্রাণিত করা এখন সময়ের দাবি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। তাই কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রযুক্তি ও সচেতনতার মিশ্রণে ‘থ্রি জিরো’ ফরমুলা বাস্তবায়ন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।


🎙️ ড. ইউনূস যা বলেছিলেন:

“এই পৃথিবী আমাদের সৃষ্টি, তাই এটিকে ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনাও আমাদের দায়িত্ব। থ্রি জিরো হচ্ছে সেই দিকেই এক সাহসী পদক্ষেপ।”

 

ড. ইউনূসের থ্রি জিরো ফরমুলা কেবল একটি ধারণা নয়, বরং ভবিষ্যতের একটি কর্মপদ্ধতি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত কাঠামোতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।

আঁখি

×