
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সচিব আবু আলিম মো. শহিদ খান বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের কোনও বিশেষ সুবিধা হচ্ছে না, বরং সন্দেহ ও অবিশ্বাস ক্রমেই বাড়ছে। তিনি বলেন, “ড. ইউনূসের প্রতি যে আস্থা ও স্বপ্ন ছিল, তা ভেঙে যাচ্ছে। এটা সরকারকে চিন্তা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন— এই তিনটি বিষয়ের গুরুত্ব আলাদা হলেও, বর্তমানে অনেকেই এগুলোকে এক প্যাকেজ হিসেবে দেখছেন। তার মতে, “নির্বাচন একটি নির্দিষ্ট সময়েই করতে হবে। স্বৈরাচারের পরিবর্তে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার একমাত্র পথ হলো সময়মতো নির্বাচন আয়োজন। সরকার যদিও সময় ও তারিখ এখনো ঘোষণা করেনি, তবে তারা নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা করছে। সংস্কার প্রক্রিয়াও চলমান থাকবে, কিন্তু তা কতটুকু হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।”
তিনি বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রতা নিয়েও কথা বলেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়া আজহারুল ইসলামকে ২০১৪ সালে আদালত মৃত্যুদণ্ড দেন, যা হাইকোর্টে বহাল থাকে। তবে ১৩ বছর পর, ২০২৫ সালের ২৭ মে তাকে খালাস দেওয়া হয়। শহিদ খানের মতে, এ ঘটনা বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ও স্বচ্ছতার অভাবকে তুলে ধরে।
তিনি বলেন, “বিচার চলতে থাকবে, সংস্কার চলতে থাকবে। তবে নির্বাচন অবশ্যই সময়মতো করতে হবে। যারা এই তিনটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলছেন, তারা রাজনীতিকে ভুলভাবে দেখছেন।”
বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচন অক্টোবর বা নভেম্বরেই করা যেতে পারে বলে মত দেন শহিদ খান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কেন অক্টোবর-নভেম্বরে নির্বাচন করতে পারব না?”
তিনি আরও বলেন, “১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময়ও সরকারে থাকা দলগুলো প্রশাসনে ব্যাপক নিয়োগ দিয়েছিল। তবুও মাত্র তিন মাসের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয়েছিল। সেই নির্বাচনের ফলেই বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন। তাহলে এবারও কেন সম্ভব হবে না?”
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রাজনীতিবিদরা ড. ইউনূসকে পরিপূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন। তার অবস্থানকে সম্মান করছেন। তবে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। কারণ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত রয়েছে রমজান, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা, দুটি ঈদ, মে মাসে ফ্ল্যাশ ফ্লাড এবং জুনে খারাপ আবহাওয়া।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন যদি সময়মতো না হয়, তবে দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়বে। তাই সরকারকে এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=nl2_mWpOQI8
এম.কে.