ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাঁধ ও পাহাড় ধসে মৃত্যুর আশঙ্কা

পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে নদ-নদীর পানি বেড়ে অনেক গ্রাম প্লাবিত

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:২৫, ২ জুন ২০২৫

পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে নদ-নদীর পানি বেড়ে অনেক গ্রাম প্লাবিত

.

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত ও পার্বত্যাঞ্চলে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। টানা বর্ষণে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর অনেক এলাকা। বান্দরবানে ধসে পড়েছে পাহাড় ও সড়কের অনেক অংশ। খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধসে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসের পাশাপাশি ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া, পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীমান্তবর্তী কয়েক গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চট্টগ্রামের ১৪টি স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া, হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তীব্র স্রোতে বাঁধের প্রায় ৪শ’ মিটার অংশ ধসে গেছে। ভোলায় জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে মৃত হরিণ। খবর স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা, সংবাদদাতা ও পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধির।
চট্টগ্রাম ॥ টানা বর্ষণে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর অনেক এলাকা। নিম্নচাপের প্রভাবে আগাম বর্ষার কবলে পড়েছে দেশ। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জনজীবনে এক ধরনের অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। সড়কে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। এদিকে, বর্ষণের পাশাপাশি সাগরে বাতাস থাকায় বন্দর বহির্নোঙরে পণ্য লাইটারিং বন্ধ হয়ে আছে। তবে জেটিতে কন্টেনার ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৪ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এখন নি¤œচাপ না থাকলেও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আরও অন্তত দুদিন এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারে। সাগরে বাতাস থাকায় ছোটখাটো নৌযানগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে হবে। তবে এখন সমুদ্র ও নদীবন্দরগুলোর জন্য কোনো বিপদ সংকেত নেই। রবিবার সকাল থেকে পুরোদিন বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। নগরীর মুরাদপুর, শুলকবহর, পাঁচলাইশ, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, রাহাত্তারপুল, ছোটপুলসহ নিচু এলাকাগুলোর সড়ক চলে যায় পানির নিচে। অনেক ভবনের নিচতলায় পানি ঢুকে যায়।
বান্দরবান ॥ কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ভারি বর্ষণের ফলে জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সংযোগ সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত পাহাড় ও সড়কধসের ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া রুমা-ওয়াইজংশন সড়কের দাওলিয়ান পাড়া এলাকাসহ বেশকিছু স্থানে পাহাড়ের মাটি সরে এসে উপজেলাগুলোতে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ভারি বৃষ্টির কারণে জেলার রোয়াংছড়ি ও থানচি সড়কে অতি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রীরা।
বান্দরবানের পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার প্রথম শ্রেণি আবহাওয়া পর্যেবক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত, অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বশেষ বিকেল ৬টা পর্যন্ত জেলাজুড়ে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলায় দুর্ঘটনা এড়াতে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে। যেন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণভাবে অবস্থানরত বসবাসকারীরা নিরাপদ স্থানে চলে যায়।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, পাহাড়ধসের আশঙ্কায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি অতি ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া, ৬০টি হোটেল-মোটেল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  
খাগড়াছড়ি ॥ জেলা  শহরের নেন্সীবাজার, মহালছড়ির ধুমনীঘাট ও ভুয়াছড়ির  রাজশাহী টিলা এলাকায় পাহাড়ধসে পড়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সড়ক সচল করতে কাজ করছে। দীঘিনালা লংগদু আঞ্চলিক সড়কের ইয়ারং ছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসে মাটি ও গাছ পড়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, বর্ষণ অব্যাহত থাকায় চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনীর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান,  জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সবুজবাগ ও শালবনসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে শুরু করে প্রশাসন। জেলায় ১২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানিয়েছেন, বন্যা ও পাহাড় ধস মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। কিছু স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলে তা অপসারণ করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি ॥ প্রবল বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বাড়ছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু সড়কে পাহাড়ধসের ঘটনায় ঘটেছে। এ ছাড়া, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলা সদরসহ বেশি কয়েকটি উপজেলার স্কুল, বসতবাড়ি ও ফসলি জমির জমি প্লাবিত হয়েছে।
টানা বৃষ্টির ফলে রবিবার সকালে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি, কলাবাগানসহ আরও অন্তত দশটি স্থানে পাহাড়ধসের খবর পাওয়া গেছে। ফলে এসব সড়কে সাময়িকভাবে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, পাহাড়ধসের কারণে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কয়েকটি স্থানে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক রাস্তার মাটি সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এদিকে, পানি বাড়তে থাকায় জেলার জুড়াছড়ি, বাঘাইছড়ি, লংগদু ও সদর উপজেলার বেশকিছু জায়গা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
রাঙ্গামাটি  জেলা প্রশাসক  মো. হাবিব উল্ল্যাহ মারুফ জানান, সম্ভাব্য যে কোনো দুূর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার আশপাশের সীমান্তর্বর্তী কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হাওড়া-নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
রবিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাওড়া নদীর বিভিন্ন অংশে পানির প্রবল চাপের সৃষ্টি হয়েছে। বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বালুভর্তি প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। কলন্দি খাল, কালিকাপুর, আব্দুল্লাপুর, জাজিগাং, বাউতলা হয়ে মোগড়া ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত হাওড়া নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এতে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর ও বঙ্গেরচর গ্রামের বিভিন্ন সড়ক ও জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয়দের ভাষ্যানুযায়ী, শনিবার রাত থেকেই নদী ও খাল দিয়ে পানি ঢুকছে। ফলে, এসব এলাকার মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার মাছ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, শনিবার রাত থেকে পানি ঢুকছে। বন্দরের আশপাশে অনেক জায়গা তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত রপ্তানিতে প্রভাব না পড়লেও পানি যেভাবে বাড়ছে, এতে করে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক ডুবে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছি।
মোগড়া ইউনিয়ন প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার প্রকৌশলী মো. শামিম আলম বলেন, বেশ কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও প্রশাসনের সমন্বয়ে কাজ চলছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান জানান, হাওড়া নদীর পানি বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সীতাকু-, চট্টগ্রাম ॥ উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সৈকত থেকে কুমিরা ফেরিঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ১৪টি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জোয়ারের পানির আঘাতে। প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ব্লক বসানো হয়েছিল। তা সরে গিয়ে কিছু অংশে তৈরি হয়েছে বেশকিছু বড় গর্তের। শুধু বেড়িবাঁধ নয়, বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট এলাকায় সিকদার খালের স্লুইস গেটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিছু বালুর বস্তা দিয়ে স্লুইস গেটটি ধরে রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট সংস্কার করা না হলে বর্ষায় মানুষকে আরও দুর্ভোগে পড়তে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ৫০০ মিটারের মতো। এ অংশের স্থায়ী সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।
জমাদার পাড় এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ বলেন, পাঁচ বছর আগে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। আগের বাঁধটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় ২০ বছর দুর্ভোগের মধ্যে কাটিয়ে এটি মানুষ পেয়েছে। এখন নতুন বাঁধটিও ক্ষতিগ্রস্ত, যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাঁশবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মো. রুবেল বলেন,  স্লুইস গেট মেরামত না করায় সাগরের লবণপানি ঢুকে এলাকার চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সন্দ্বীপে যাতায়াতের জন্য স্লুইসগেটটির পাশে সুন্দর ফেরিঘাট নির্মাণ করা হয়েছে, অথচ স্লুইস গেটটি ভাঙা। এবার বর্ষায় জোয়ারের পানি ঢুকে ফেরিঘাট সড়ক ডুবে যেতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম তারেক বলেন, আকিলপুর এলাকায় বেড়িবাঁধে যে ব্লক বসানো হয়েছে, তা আকারে তুলনামূলক ছোট। এগুলো সাধারণত ঢেউ নেই, এমন নদী এলাকায় ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ব্লক বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের উপযোগী নয়। ঢেউয়ের চাপ সামাল দিতে হলে নতুন করে ভারি ব্লক  তৈরি করে এর পর বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ বা মেরামত করতে হবে।
হবিগঞ্জ॥ কালনী-কুশিয়ারা ও খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে হবিগঞ্জে। টানা পঁাঁচদিনের বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বিভিন্ন নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। খোয়াই নদীর তীব্র স্রোতের কারণে বাঁধের প্রায় ৪০০ মিটার অংশে ধস নেমেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, পুরো বাঁধটি যদি ধসে পড়ে, তবে আশপাশের অর্ধশতাধিক এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, রবিবার দুপুর পর্যন্ত চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা পয়েন্টে খোয়াই নদীর পানি ২১ দশমিক ২৫ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে। একই সময় আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় কালনী-কুশিয়ারা নদীর পানি ৫.৪৯ মিটার উচ্চতায় ছিল, যা বিপৎসীমার চেয়ে ৪৪ সেন্টিমিটার বেশি।
হবিগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী একরামুল হক বলেন, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে খোয়াই ও কালনী-কুশিয়ারা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।
হবিগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, প্রায় ৩০ মিটার জায়গাজুড়ে বড় ধরনের ধস দেখা দিয়েছে। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
ভোলা ॥ ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় সংরক্ষিত বন থেকে জোয়ারের পানিতে একটি মৃত হরিণ ভেসে এসেছে। শনিবার বিকালে উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাতিরখালে ভেসে আসা মৃত হরিণটি উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে বনবিভাগকে খবর দেন তারা।
এদিকে, বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয় সংরক্ষিত বনাঞ্চল চরপাতালিয়া, চরপিয়ালসহ অনেক চর। এসব বনাঞ্চলে হরিণ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে জোয়ারের পানিতে হরিণটির মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরার পঁচা কোড়ালিয়া বিট কর্মকর্তা জাহিদুর ইসলাম জানান, নিম্নচাপের  প্রভাবে জোয়ারে পানিতে বনের হরিণ শাবকটি মারা গেছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা এনে পরীক্ষা করা হয়েছে।
মনপুরার রেঞ্জ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, স্থানীদের মাধ্যমে খরব পেয়ে একটি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও মৃত হরিণ পাওয়া যায় কিনা তা খুঁজে দেখতে বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

×