ড্রোন দিয়ে চলছে বিডিএস জরিপ: ২টি কারণে বাদ পড়তে পারেন আপনি

বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ বা বিডিএস জরিপ নিয়ে অনেকেই আশান্বিত হলেও, একটি ভিডিওতে আইনজীবী রেজাউল ইসলাম খান স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন—দুইটি কারণে এই জরিপে আপনি বাদ পড়তে পারেন।

তিনি বলেন, বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে) একটি দীর্ঘমেয়াদী ডিজিটাল খতিয়ান প্রণয়নের প্রকল্প। সরকারের লক্ষ্য—একবার এই ডিজিটাল খতিয়ান সম্পন্ন হলে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে আর নতুন করে জরিপ করতে না হয়। তবে এর সুফল পেতে হলে কয়েকটি শর্ত পূরণ আবশ্যক।

কী কারণে আপনার নামে হবে না জরিপ?

আইনজীবী রেজাউল ইসলাম খান জানান, দুইটি প্রধান কারণে আপনার নামে বিডিএস জরিপ হতে নাও পারে।

প্রথম কারণ—আপনার জমির বৈধ দলিল, খতিয়ান ইত্যাদি থাকা সত্ত্বেও এলাকার সর্বশেষ বলবৎকৃত রেকর্ড (যেমন: বিএস, আরএস) যদি অন্য কোনো ব্যক্তির নামে হয়ে থাকে এবং আপনি যদি সেই ভুল সংশোধনের জন্য কোনো পদক্ষেপ না নেন—তাহলে বিডিএস জরিপ আপনার নামে হবে না।

এই ভুল রেকর্ড হতে পারে মৃত বাবা-মা, বিক্রেতা (দাতা) অথবা অন্য কারো নামে। এ অবস্থায় আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিস বা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধন করতে হবে। না হলে, ডিজিটাল খতিয়ানে আপনার নাম অন্তর্ভুক্ত হবে না।

দ্বিতীয় কারণ—আপনি যদি জমির প্রকৃত মালিক হন, কিন্তু দখলে না থাকেন এবং কোনো কাগজপত্র (দলিল, রায়, খতিয়ান) না থাকে, তাহলে আপনার জায়গায় দখলদার ব্যক্তি বিডিএস জরিপে নাম অন্তর্ভুক্ত করে ফেলতে পারে। যদিও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়, যেমন—ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ অনুসারে, কোনো কাগজপত্র না থাকা ব্যক্তিকে জমি ছাড়তে হবে। তবুও, যদি আপনি আদালতের আশ্রয় না নেন, তাহলে জরিপে আপনি বাদ পড়তে পারেন।

করণীয় কী?

আইনজীবীর পরামর্শ, জমির মালিকানার বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও যদি রেকর্ড অন্যের নামে হয়, তবে বিলম্ব না করে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে আবেদন করতে হবে বা আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করতে হবে।

দখলদার থাকলে এবং তার কাছে কোনো বৈধ কাগজ না থাকলে, দখল উচ্ছেদ ও ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে হবে। অন্যথায়, আপনি জমির মালিক হয়েও বিডিএস খতিয়ান থেকে বাদ পড়ে যেতে পারেন।

বিডিএস খতিয়ানে কী থাকছে?

এই ডিজিটাল খতিয়ানে আপনি পাবেন:

১. ব্যক্তিগত খতিয়ান (শুধু আপনার নামে),

২. মালিকানা সনদ,

৩. জমির ম্যাচিং মানচিত্র,

৪. নামজারি খতিয়ান — সবকিছুই অনলাইনে পাওয়া যাবে।

তবে সাবেক খতিয়ান ও দলিল বাতিল হবে না; সেগুলওও অনলাইনে সংরক্ষিত থাকবে।

আইনজীবী বলেন, ‘আপনার কাগজপত্র সঠিক না থাকলে, আদালতে পদক্ষেপ না নিলে কিংবা দখলদারকে আইনি পথে উচ্ছেদ না করলে—আপনার নামে বিডিএস খতিয়ান হবে না। তাই এখনই সতর্ক হন।’

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=hW0Bk4JTAyE