ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জমি আপনার, দখল অন্যের! জমির দখল উদ্ধারে লাগবে শুধু এই একটি প্রমাণ

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৪:৫০, ৩ জুন ২০২৫

জমি আপনার, দখল অন্যের! জমির দখল উদ্ধারে লাগবে শুধু এই একটি প্রমাণ

ছবি: প্রতীকী

জমির কাগজপত্র সব আপনার নামে। আপনি বৈধ মালিক। কিন্তু তারপরেও জমির দখল পাচ্ছেন না—এই চিত্র এখন দেশের নানা প্রান্তে প্রায় স্বাভাবিক। প্রভাবশালী কিংবা আত্মীয়-স্বজনের দখলে থেকে যাচ্ছে আপনার জমি। অথচ দখল ফিরে পেতে চাইলে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন রয়েছে সহজ ব্যবস্থা—শুধু দরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।

একটি ভিডিওতে আইনজীবী সেলিম রেজা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এর সহজ সমাধান আছে–শুধু প্রয়োজন সঠিক প্রমাণপত্র।’

সেলিম রেজা বলেন, ‘যদি আপনার কাছে মাত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ থাকে, তাহলে প্রশাসনই আপনার পক্ষে হস্তক্ষেপ করে জমি বুঝিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে। বেশি ঝামেলা, খরচ বা আদালতের প্যাচে না গিয়েও আপনি জমি উদ্ধার করতে পারবেন।’

অনেক সময় দেখা যায়, ওয়ারিশ হিসেবে জমির অংশ পাওয়ার কথা থাকলেও অন্য উত্তরাধিকারীরা বা আত্মীয়রা তা বুঝিয়ে দেয় না। আবার পূর্বপুরুষের জমি লিজ, বন্ধক বা অন্যভাবে কাউকে সাময়িকভাবে দিলে পরবর্তীতে সেটি তারা ফিরিয়ে দেয়নি। দিনের পর দিন ভোগ করছে, এমনকি রেকর্ড সংশোধন করে নিজের নামে করে ফেলেছে। কিন্তু এগুলোকে ঠেকানোর উপায় এখন আইনি পথেই সম্ভব, তাও তুলনামূলকভাবে অনেক সহজভাবে।

জমি উদ্ধারে যে একটি প্রমাণ জরুরি

ভোগ দখলে না থেকেও জমির প্রকৃত মালিকানা প্রমাণ করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন ওয়ারিশ সনদ। এটি না থাকলে আপনি আইনি প্রক্রিয়ায় কোনো দাবি জানাতে পারবেন না। এরপর দরকার—

  • যিনি জমি রেখে গেছেন, তার ক্রয় দলিল বা ওয়ারিশ বন্টন দলিল।
  • সেই জমির রেকর্ড বা খতিয়ান যেখানে তার নাম রয়েছে।

এই তিনটি কাগজ থাকলে আদালতের মাধ্যমে আপনি সহজেই জমির দখল ফিরে পেতে পারেন। এমনকি জমি যদি আপনি ক্রয় সূত্রে পেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে শুধুই ক্রয় দলিল ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ড থাকলেই যথেষ্ট।

বর্তমানে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন অনুযায়ী, চাইলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েও আবেদন করে জমি উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। যদিও সব জেলা প্রশাসনে এই ব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। তবে যারা প্রশাসনিক পদ্ধতিতে সেবা পাচ্ছেন না, তারা সোজা আদালতের স্মরণাপন্ন হতে পারেন।

আগে জমির দখল সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি হতে ১০–১৫ বছর সময় লাগত। এখন সেই সময় অনেকটাই কমে এসেছে। ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সমন পাঠানো ও সাক্ষ্যগ্রহণ আগের মতো সময়সাপেক্ষ নয়। এমনকি রায়ের পর আলাদা জারি মামলা করারও দরকার পড়ে না—আদালতই সরাসরি প্রশাসনকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিতে পারে।

আপনি যদি প্রকৃত মালিক হন, এবং উপযুক্ত কাগজপত্র থাকে, তাহলে জমির দখল ফিরে পাওয়া এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ। শুধু জানুন, বুঝুন এবং যথাযথ কাগজপত্র সংগ্রহে রাখুন। আইনের সহায়তা নিয়ে এগিয়ে যান, জমির ন্যায্য অধিকার অবশ্যই ফিরিয়ে দেবে সরকার।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=yLAE5iqW-Ao

রাকিব

আরো পড়ুন  

×