ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নতুন ব্যবস্থায় সহজ হচ্ছে জমির মালিকানা প্রমাণ, কমবে মামলা ও ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৬:৩২, ৩ জুন ২০২৫

নতুন ব্যবস্থায় সহজ হচ্ছে জমির মালিকানা প্রমাণ, কমবে মামলা ও ভোগান্তি

ছবি: প্রতীকী

জমির মালিকানা প্রমাণ এবং দখল পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া আগের তুলনায় অনেক সহজ ও দ্রুত হচ্ছে। এ বিষয়ে এক ভিডিও আলোচনায় আইনজীবী সেলিম রেজা বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা মামলার জট ও দীর্ঘসূত্রতা এখন কমে আসবে। নতুন পদ্ধতিতে আদালতে জমি সংক্রান্ত মামলা দায়েরের পরপরই প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য এফিডেভিট আকারে দাখিল করা যাবে, মৌখিক জবানবন্দি ও বারবার হাজিরার ঝামেলা আর থাকছে না।

সেলিম রেজা বলেন, কোনো জমি নিয়ে বিরোধ শুরু হলে সাধারণত গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়। সেখানে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে বিচার হয়। তবে কেউ রায় না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হয় এবং তখন বিষয়টি দেওয়ানি আদালতে গড়ায়।

পূর্বের বিচার ব্যবস্থায় ছিল ১২ ধাপের দীর্ঘ প্রক্রিয়াঅভিযোগ দাখিল, সমন জারি, সাক্ষ্য গ্রহণ, দলিল যাচাইসহ নানা ধাপে দীর্ঘ সময় লাগত। সমনের জবাব না আসা, সাক্ষীদের উপস্থিতিতে দেরি, বিচারকের বদলিএসব কারণে একটি মামলার নিষ্পত্তিতে ১০-১৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেত।

নতুন ব্যবস্থায় কী থাকছে?

বর্তমানে সাক্ষ্য সরাসরি লিখিত আকারে (এফিডেভিট) আদালতে দাখিল করা যাবে। সমন পাঠানোর প্রক্রিয়াও আধুনিক হয়েছে—SMS, WhatsApp, ই-মেইলের মাধ্যমে সমন পাঠানো যাবে। বিচারক যদি মনে করেন, বিবাদীপক্ষ সমন পেয়েছেন, তবুও উত্তর দিচ্ছেন না, তাহলে তিনি পরবর্তী ধাপে এগোতে পারবেন।

দলিল যাচাই সহজ হচ্ছে

দলিল, খতিয়ান, রেকর্ড যাচাই এখন সহজ হচ্ছে। আর জুলাই থেকে চালু হতে যাওয়া ‘ভূমি মালিকানা সনদ ডিজিটালভাবে কিউআর কোড দিয়ে যাচাই করা যাবে। এতে বিচারক স্বয়ংক্রিয়ভাবে মালিকানা যাচাই করতে পারবেন, আলাদা করে দলিল অফিসে পাঠাতে হবে না।

ডিক্রিজারির প্রয়োজন নেই

সেলিম রেজা বলেন, আগে মামলার রায় কার্যকরের জন্য আলাদা করে ‘ডিক্রিজারি মামলা করতে হতো। এখন রায় দেওয়ার পর আদালত নিজেই সেই রায় বাস্তবায়নের নির্দেশ দেবেন, এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরাসরি দখল বুঝিয়ে দেবেন।

সময় বাঁচবে, মামলা কমবে

নতুন ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ চারবার টাইম পিটিশন দেওয়া যাবে। এর বেশি নয়। ফলে মামলা আর দীর্ঘ হবে না। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মতে, যে মামলা আগে পাঁচ বছর লাগত, তা এখন এক বা দুই বছরের মধ্যে শেষ হবে, এমনকি ছয়-সাত মাসেও।

এই নতুন ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়নের পথে। বিচারক, আইনজীবী ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। জমি মালিকদের এখন আর দশ বছর অপেক্ষা করতে হবে নাবিচার দ্রুত এবং কার্যকর হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

জমির মালিকানা বা দখল সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকলে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আইনজীবী সেলিম রেজা।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=55pXad8qDhg

রাকিব

আরো পড়ুন  

×