
ছবি: সংগৃহীত
২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের উচ্চ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সংশয় প্রকাশ করেছে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ সিএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এ মন্তব্য করে।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার বলেন, “চলতি অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৪.২৫ শতাংশ বেশি। তবে দেশের বর্তমান কর কাঠামো ও কর আদায় ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।”
তবে তিনি আশাবাদী যে, কর কাঠামোর আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়িয়ে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। তিনি অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান এবং বলেন, “এটি বাস্তবায়ন হলে রিটার্ন জমাকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।”
প্রস্তাবিত বাজেটে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন ব্যয়কে সময়োপযোগী এবং উন্নয়ন অভিমুখী পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন আইসিএবি প্রেসিডেন্ট।
তিনি আরও বলেন, “প্রথমবারের মতো নারীদের অবৈতনিক গৃহকর্ম জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী ও নীতিগত দৃষ্টিকোণে গুরুত্বপূর্ণ।”
আইসিএবি জানায়, এবারের বাজেট আকার আগের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে, যা সরকারের সঙ্কোচনমূলক কৌশলের প্রতিফলন। বাজেট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ, যা অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
মারিয়া হাওলাদার বলেন, “উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও সীমিত রাজস্ব আয়ের প্রেক্ষাপটে এটি একটি গ্রহণযোগ্য ও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।”
আইসিএবি জানায়, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ করমুক্ত আয় সীমা ৩.৫ লাখ থেকে ৩.৭৫ লাখ টাকা করায় খুব বেশি স্বস্তি পাবে না। তারা এই সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি প্রান্তিক করদাতাদের ন্যূনতম কর ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা করাকে “বিপরীতমুখী” ও চাপ সৃষ্টিকারী বলে আখ্যা দেয়।
টার্নওভার কর ০.৬% থেকে ১% করার প্রস্তাবকেও ‘ব্যবসাবান্ধব নয়’ বলে মন্তব্য করে আইসিএবি। তাদের মতে, শুধুমাত্র প্রকৃত মুনাফার ভিত্তিতে কর আরোপ করাই যুক্তিযুক্ত। বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য গৃহীত কিছু কর নীতি যেমন শুল্ক হ্রাস, সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার, বৈদ্যুতিক যানবাহনে প্রণোদনা প্রভৃতি পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় আইসিএবি। তবে সংস্থাটি অনলাইন সেবা ও আমদানি কমিশনে অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
ফারুক