ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, ভারতে আটক তিন আওয়ামী লীগ নেতা নিয়ে বললেন ইলিয়াস

প্রকাশিত: ২১:২৬, ৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ২১:২৭, ৫ জুন ২০২৫

ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, ভারতে আটক তিন আওয়ামী লীগ নেতা নিয়ে বললেন ইলিয়াস

দেড় দশকের একচ্ছত্র শাসনের অবসান ঘটে ছাত্র জনতার গণ-অভুত্থানে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে উঠে। ওই দিনেই দেশ ত্যাগ করেন সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। সেই সাথে দিশেহারা হয়ে পড়ে তার দল আওয়ামী লীগ। হালচাল বুঝে শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। তবে আশ্রয়ের সেই আশ্বাস বেশিদিন স্থায়ী হচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে এসে কলকাতা দখল করতে এরই মধ্যে ভারতকে নিজের দেশ ধরে নিয়ে নানা ধরণের অপরাধে জড়াচ্ছে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা। কলকাতাকে বানিয়েছেন অপরাধের অভয়ারণ্য।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এই মুহূর্তে অবস্থান করছে ভারতে। ভারতে পালিয়ে থেকেও আওয়ামী লীগ নেতাদের অব্যাহত অপকর্ম এবার সামনে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার শ্যামনগরে ভারতীয় পুলিশের হঠাত অভিযানে ধরা পড়ে তিনজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা। যাদের মধ্যে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম জুয়েল, আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল রহমান এবং হাসিনা আমলে সাবেক পুলিশ সুপার ফায়সাল আরাফাত আবিদ।

জানা যায়, তারা গত পাঁচ মাস ধরে স্থানীয় এক বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। স্থানীয়দের ভাষ্যে তারা ছিল অতি রহস্যজনক। প্রতিদিনের কাজকর্ম, চলাফেরা সবকিছু দিয়েই ছিল সন্দেহ। কিন্তু তারা কি করতো তাদের কি পরিচয় সেটা আমরা কখনো জানতে পারছি না। এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আসার পর থেকেই অশান্তিতে ছিলেন তারা। দরজা জানালা বন্ধ করা থাকতো। এরপর স্থানীয়দের জানালে তাদের আটক করা হয়। আটকের আগেও তারা মাদকাসক্তি ও অসামাজিক কাজে জড়িত ছিল। ভারতীয় পুলিশ এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আপাতত ছেড়ে দিয়েছে। তবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে তাদের।

পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোয় চলছে ধরপাকড়। লক্ষাধিক আওয়ামী নেতা কর্মী যারা ভারতকে নিরাপদ ভেবেছিলেন তারাও এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে তাদের অপকর্মের কারণে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশে আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ। এতে দেশমুখ হওয়া তো দূরের কথা, পালানোতেই ব্যস্ত এখন দলটির শীর্ষ নেতারা। ভারতেও জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগস্ট মাস থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে পুশ ব্যাক করবে বলে জানা গেছে।

এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অনেকেই গ্রেফতারের আড়ালেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে এই খর তাদের উপরেই নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুঞ্জন আছে সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এ আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইনানসহ দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ইতোমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ভারত ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ ইউরোপ বা আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে খবর ছড়িয়েছে। তারা চাইলেও বাংলাদেশে ফিরতে পারবে না। এর মধ্যে বন্ধু দেশ ভারত তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় পালানোর রাস্তাও খুঁজে পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ নেতারা। এ যেন নিজেদের অপকর্মের পরিণতির প্রতিচ্ছবি। 

 

সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/19BSinfwr8/

রিফাত

আরো পড়ুন  

×