
ছবিঃ সংগৃহীত
সরকারের উদ্যোগে দেশের ১১৭ বছরের পুরোনো দলিলপত্র ডিজিটালাইজ করে অনলাইনে সংরক্ষণের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ভূমি মালিকদের জন্য এ এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এখন থেকে দলিল রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ কার্যক্রম হবে অনলাইনে।
সরকার ১৯০৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত রেজিস্টার্ড হওয়া সকল দলিল স্ক্যান করে একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণের কাজ করছে। এর ফলে ভূমি মালিকরা দেশে বা বিদেশে বসেই নিজের জমির দলিল যাচাই-বাছাই করতে এবং নির্দিষ্ট ফি দিয়ে সার্টিফায়েড কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
সরকারি সূত্র জানায়, এ কার্যক্রমের মাধ্যমে এনালগ পদ্ধতির দুর্নীতি, হয়রানি ও জমি জালিয়াতি বন্ধ হবে। অতীতে অনেক সময় দেখা গেছে, প্রবাসী বা দূরে অবস্থানরত মালিকদের অনুপস্থিতিতে জমি জাল দলিলের মাধ্যমে অন্যের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। অনলাইন দলিল পদ্ধতি এসব প্রতারণা রোধ করবে।
কীভাবে চলবে অনলাইন দলিল কার্যক্রম?
-
১৯০৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত যেসব দলিল রেজিস্টার অফিসে সংরক্ষিত রয়েছে, তা ধাপে ধাপে স্ক্যান করে অনলাইন ডাটাবেইসে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
-
যেসব দলিল যুদ্ধ বা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বা হারিয়ে গেছে, সেগুলো পুনরুদ্ধারযোগ্য নয়। তবে মালিকের কাছে যদি কপি থাকে, তা জমা দিয়ে অনলাইন ডাটাবেসে যুক্ত করার সুযোগ থাকবে।
-
সরকার একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট চালু করবে, যেখানে দলিলের তথ্য যাচাই ও ডাউনলোড করা যাবে।
ভূমি মালিকদের করণীয় কী?
১. প্রথমে অনলাইন দলিল প্ল্যাটফর্ম চালুর ঘোষণা ও তালিকা দেখে নিশ্চিত হতে হবে আপনার দলিল সিস্টেমে যুক্ত হয়েছে কিনা।
২. দলিল না থাকলে সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে যোগাযোগ করে কপি জমা দিয়ে অনলাইন অন্তর্ভুক্তির আবেদন করতে হবে।
৩. কোন দালালের খপ্পরে না পড়ে সরাসরি সরকারি অফিসের সহায়তা নিতে হবে।
৪. দলিলের কোনো কপি আপনার কাছে থাকলে তা ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন এবং প্রয়োজনে স্ক্যান করে অফিসে জমা দিন।
সতর্কতা
-
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
-
একবার সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত হলে আপনার দলিল কেউ আর সহজে জাল করতে পারবে না।
-
ভুল তথ্য বা কাগজপত্র জমা দিলে অনলাইনকরণ ব্যর্থ হতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সবার জন্যই দলিল অনলাইনকরণ বাধ্যতামূলক। এতে শুধু দুর্নীতি রোধই নয়, বরং প্রবাসী ও ব্যস্ত নাগরিকদের জন্য এটি একটি সময়োপযোগী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
ইমরান