ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যুদ্ধ কি সামনে? ইউরোপজুড়ে বারুদের গন্ধ, ব্রিটেন বলছে প্রস্তুতির সময় এখনই!

প্রকাশিত: ২৩:০১, ৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:০৪, ৬ জুন ২০২৫

যুদ্ধ কি সামনে? ইউরোপজুড়ে বারুদের গন্ধ, ব্রিটেন বলছে প্রস্তুতির সময় এখনই!

হাওয়ায় যেন বারুদের গন্ধ। ইউরোপের আকাশে অস্থিরতার কালো মেঘ জমেছে। ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধের ছায়া থেমে নেই, বরং তা বিস্তৃত হয়ে পড়ছে গোটা মহাদেশে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, "আমরা এমন এক সময়ে আছি, যেখানে হুমকি এসেছে স্নায়ুযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ রূপে। রাশিয়ার আগ্রাসন, সাইবার হামলা, আকাশে-সমুদ্রে রুশ টহল সব মিলিয়ে যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা এখন এক ক্রান্তিকাল পার করছে।"

সেই প্রেক্ষিতেই স্টারমার ঘোষণা দিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা কৌশল বাস্তবায়নে বাড়ানো হচ্ছে সামরিক ব্যয়। নির্মাণ করা হবে ১২টি আক্রমণাত্মক সাবমেরিন, বিনিয়োগ করা হবে বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড পারমাণবিক ও ডিজিটাল শক্তিতে। বিশেষ করে সাইবার আক্রমণ মোকাবেলায় গঠিত হবে একটি শক্তিশালী 'সাইবার কমান্ড ইউনিট'।

রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার পরই এই কৌশলগত ঘোষণা এলো। স্টারমারের মতে, সংঘাত প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল পুরোদমে প্রস্তুত থাকা।

প্রতিরক্ষা কৌশল পর্যালোচনায় কাজ করছেন সাবেক ন্যাটো মহাসচিব জর্জ রবার্টসন। পরিকল্পনায় আছে:

  • দূরপাল্লার অস্ত্র সংগ্রহ

  • সেনা সদস্যদের আবাসনের উন্নয়ন

  • নতুন ড্রোন প্রযুক্তি

  • গোলাবারুদ মজুদ বৃদ্ধি

  • যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক ছায়া থেকে বের হয়ে নিজস্ব যুদ্ধবিমান গঠনের পরিকল্পনা।

জার্মান প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল ক্লার্সটেইন ব্রয়ার সতর্ক করে বলেছেন, “২০২৯ সালের মধ্যেই রাশিয়া সরাসরি ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে পারে।”

পোল্যান্ড ও ব্যাল্টিক রাষ্ট্রগুলো প্রস্তুতি নিচ্ছে যেন কালই যুদ্ধ শুরু হতে পারে। ইউরোপজুড়ে বাড়ানো হচ্ছে প্রতিরক্ষা বাজেট, সেনা সংখ্যা, আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে সামরিক ঘাঁটি।

একসময় যাদের নিরাপত্তা নির্ভর করত যুক্তরাষ্ট্রের উপর, সেই জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালিও বুঝে গেছে—এখন নিজেদেরই হতে হবে শক্তিশালী।যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে AUKUS (ইউকে-ইউএস-অস্ট্রেলিয়া জোট)-এ যুক্ত হয়ে সাবমেরিন নির্মাণে নেমেছে। লক্ষ্য শুধু ভারত-প্যাসিফিক নয়, ইউরোপেও সামরিক ভারসাম্য রক্ষা।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাইক মার্টিন বলছেন, “ব্রিটেন এখন বুঝে গেছে, শুধু আমেরিকার উপর নির্ভর করে টিকে থাকা যাবে না।”

বিশ্লেষকদের মতে, হয়তো এখনই যুদ্ধ নয়, তবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিজেই একধরনের প্রতিরক্ষা শক্তি, যা ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সংঘাত ঠেকাতে পারে।

মিমিয়া

×