
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মাঝে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে একটি অতিকায় গ্রহাণু, ২০২৪ ওয়াই আরফোর। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই গ্রহাণুটি যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তবে তা হতে পারে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিপর্যয়। প্রায় ৪০ থেকে ১০০ মিটার প্রশস্ত এই গ্রহাণুটিকে বিজ্ঞানীরা 'সিটি কিলার' নামে অভিহিত করেছেন, কারণ এর প্রভাবে একটি গোটা শহর মুহূর্তেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। গবেষণায় জানা গেছে, গ্রহাণুটির শক্তি প্রায় ৮০ লাখ টন টিএনটি বিস্ফোরণের সমান হতে পারে, যা ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধজুড়ে ভয়াবহ ধ্বংস ডেকে আনতে সক্ষম।
এই সম্ভাব্য ধ্বংসের মূল লক্ষ্যবস্তু হতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। এছাড়াও ইথিওপিয়া, সুদান, নাইজেরিয়া, ভেনিজুয়েলা, কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরের ওপরও এই গ্রহাণুর আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে এই গ্রহাণুর পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা মাত্র ২ শতাংশ এবং ৯৮ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে এটি পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যাবে, তবুও বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তা কমছে না।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে, এই গ্রহাণুর গতিপথ নির্ধারণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ২০২৮ সালের মধ্যে যদি এটি মহাশূন্যে হারিয়ে যায়, তবে পরবর্তীতে তার কক্ষপথ সঠিকভাবে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়বে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, যদি এর মতো গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে এবং তা প্রতিহত করার কোনো ব্যবস্থা না থাকে, তবে তা মানব সভ্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের সব মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলোর প্রতি, যেন তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করে এই ধরনের সম্ভাব্য বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে পারে। যদিও এখনও পর্যন্ত গ্রহাণুর আঘাত ঠেকাতে কার্যকর কোনো পরিকল্পনা বা প্রযুক্তি তৈরি হয়নি, তবে ভবিষ্যতের জন্য এমন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এখন প্রয়োজন বৈজ্ঞানিক প্রস্তুতি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলা। কারণ, এ ধরনের দুর্যোগের মুখে পড়লে প্রতিরোধই হতে পারে একমাত্র রক্ষা।
আঁখি