ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একবার হ্যাক হলে সর্বনাশ! ইমেল অ্যাকাউন্ট বাঁচাতে যা যা করবেন

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ৬ জুন ২০২৫

একবার হ্যাক হলে সর্বনাশ! ইমেল অ্যাকাউন্ট বাঁচাতে যা যা করবেন

ছবি: সংগৃহীত

একসময় ইমেল শুধু যোগাযোগের মাধ্যম হলেও, সময়ের সঙ্গে তার গুরুত্ব বহুগুণে বেড়েছে। এখন অফিসের কাজ থেকে শুরু করে অনলাইন কেনাকাটা, ব্যাংকিং বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রেও ইমেল অপরিহার্য। তাই ব্যক্তিগত ইমেল যদি হ্যাক হয়ে যায়, তবে শুধু পেশাগত কাজ নয়—ব্যক্তিগত তথ্য ও আর্থিক নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ে।

হ্যাকিংয়ের পর দ্রুত করণীয়

যদি কখনও বুঝতে পারেন আপনার ইমেল অ্যাকাউন্ট অন্য কারও নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি—

১. পাসওয়ার্ড পরিবর্তন:
অন্য কোনো নিরাপদ ডিভাইস থেকে আপনার ইমেলের পাসওয়ার্ড বদলানোর চেষ্টা করুন।

২. পুরনো ডিভাইসের সহায়তা নিন:
বাড়ির কোনও পুরনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ যেটিতে আগেই ইমেলে লগ-ইন করা ছিল, সেটি ব্যবহার করে নিরাপদ ওয়াই-ফাই ও ব্রাউজার দিয়ে পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের কাজটি করুন।

৩. রিকভারি অপশন কাজে লাগান:
আগেই যদি রিকভারি ইমেল বা নম্বর সংযুক্ত করে থাকেন, তাহলে গুগল বা মাইক্রোসফটের মতো সার্ভিস প্রোভাইডাররা সহজেই অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারের সুযোগ দেয়।

৪. সময়সাপেক্ষ হলেও চেষ্টা চালিয়ে যান:
প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে রিকভারি করতে চাইলে, প্রক্রিয়াটি সফল হতে এক দিন বা তার চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে।

৫. বিকল্প অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন:
পুরনো অ্যাকাউন্ট ফেরত না পেলে, দ্রুত একটি নতুন ইমেল খুলে প্রয়োজনীয় সব জরুরি নথি ক্লাউড থেকে স্থানান্তর করুন এবং সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটে নতুন ইমেল ব্যবহার শুরু করুন।

ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা

হ্যাকড ইমেল ফেরত পাওয়ার পর, কিংবা নতুন ইমেল ব্যবহারের সময়েও নিরাপত্তায় কিছু বাড়তি সতর্কতা জরুরি—

১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিন:
কমপক্ষে ১২ অক্ষরের একটি জটিল পাসওয়ার্ড তৈরি করুন যাতে বড় হাতের ও ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং স্পেশাল ক্যারেক্টার থাকে।

২. পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন:
জটিল পাসওয়ার্ড মনে রাখতে সমস্যা হলে ‘পাসওয়ার্ড ম্যানেজার’ সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে পারেন। এটি সুরক্ষা বৃদ্ধিতে কার্যকর।

৩. টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখুন:
সাধারণ এসএমএসের পরিবর্তে OTP অ্যাপ (যেমন: Google Authenticator) ব্যবহার করলে নিরাপত্তা আরও বাড়ে।

৪. ‘পাসকি’ ফিচার ব্যবহার করুন:
এখন অনেক সার্ভিসে পাসওয়ার্ড ছাড়াই শুধু বায়োমেট্রিক বা ফোন দিয়ে লগ-ইন সম্ভব। এতে হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

৫. রিকভারি ইমেল ও মোবাইল নম্বর যুক্ত রাখুন:
যাতে প্রয়োজনে সহজেই অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করা যায়।

৬. নিরাপত্তা প্রশ্নের উত্তর ঠিকমতো দিন:
এমন কিছু প্রশ্ন বেছে নিন যার উত্তর আপনি ছাড়া কেউ সহজে অনুমান করতে পারবে না এবং সেগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করুন।

সতর্ক থাকলেই সুরক্ষা সম্ভব। তাই ব্যক্তিগত ইমেল ব্যবহারে সর্বদা সচেতন ও প্রস্তুত থাকুন—কারণ একবার নিয়ন্ত্রণ হারালে ক্ষতি হতে পারে বহুগুণ।

আবির

×