ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মহাকাশ থেকে রহস্যময় রেডিও সংকেত, হতবাক বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত: ০২:১০, ৭ জুন ২০২৫

মহাকাশ থেকে রহস্যময় রেডিও সংকেত, হতবাক বিজ্ঞানীরা

ছবি: সংগৃহীত

বিষয়কর ও রহস্যময় মহাকাশ মানুষকে চিরকালই করেছে মুগ্ধ। প্রতিনিয়তই সেখানে উদ্ঘাটিত হচ্ছে নতুন নতুন অজানা তথ্য ও দৃশ্য। প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধানেও চলছে নিরন্তর গবেষণা। তবে এবার মহাকাশ থেকে ভেসে এসেছে এক রহস্যময় রেডিও সংকেত, যা হতবাক করে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এই সংকেত কী? এটি কোথা থেকে এসেছে? এর পেছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে—তা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র কৌতূহল।

মহাকাশের অজানা এক বস্তু থেকে আসছে রহস্যে ঘেরা একটি রেডিও সংকেত, আর প্রতিটি সংকেত পৃথিবীতে পৌঁছাতে সময় নিচ্ছে ৪৪ মিনিট। এমন বিস্ময়কর ঘটনার প্রথমবারের মতো সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমন সংকেত এর আগে আর কখনো দেখা যায়নি। বিজ্ঞানীদের মতে, এই সংকেত জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রচলিত তত্ত্বগুলোকেই ফেলছে প্রশ্নের মুখে।

লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বস্তুটির নাম দেওয়া হয়েছে ASKAP J1935+2148 (বাংলাদেশি মিডিয়ায় ASKAP 83209 নামেও এটি পরিচিত)। এটি প্রথম পর্যবেক্ষণ করা হয় ১৯৮৮ সালে। তবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার মার্সিসন ওয়াইল্ড ফিল্ড অ্যারে টেলিস্কোপের মাধ্যমে এর অস্বাভাবিক আচরণ ধরা পড়ে। গবেষকরা লক্ষ্য করেন, এই বস্তুটি প্রতি ৪৪ মিনিট অন্তর টানা দুই মিনিট ধরে শক্তিশালী রেডিও সংকেত পাঠাচ্ছে।

এ বিষয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. নাতাশা হার্লি-ওয়াকার জানান, এই বস্তুটি কোনও পরিচিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী শ্রেণির সঙ্গে মেলে না। এর বৈশিষ্ট্য নিউট্রন তারা বা সাদা বামন তারার থেকেও আলাদা। ড. হার্লি-ওয়াকার বলেন, “আমরা এই বস্তুটির আচরণ পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারছি এটি হয়তো সম্পূর্ণ নতুন ধরনের কোনো জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু হতে পারে।”

তবে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। বস্তুটির সংকেত বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে আরও উন্নত রেডিও টেলিস্কোপ, বিশেষত অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়ার কিলোমিটার অ্যারে (SKA) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক টেলিস্কোপ। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সংকেতের উৎস ও প্রকৃতি আরও পরিষ্কারভাবে বোঝার চেষ্টা করছেন।

গবেষকরা অনুমান করছেন, এটি হয়তো একটি ধীরগতি সম্পন্ন নিউট্রন তারা কিংবা সাদা বামন তারার কোনো বিশেষ রূপ হতে পারে। তবে এই ব্যাখ্যাগুলো এখনো নিশ্চিত নয়। মহাবিশ্বের এই রহস্যময় ঘটনা বিজ্ঞানীদের সামনে উন্মোচন করছে একের পর এক প্রশ্ন। এবং এটি হয়তো সূচনা ঘটাতে চলেছে মহাকাশবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিদ্যার নতুন এক যুগের।

ফরিদ 

×