গুগল অ্যাকাউন্ট সুরক্ষায় মানতেই হবে এই ৬টি বিষয়

গুগল অ্যাকাউন্ট এখন আর শুধু ই-মেইল পাঠানোর মাধ্যম নয়। ছবি সংরক্ষণ, গুরুত্বপূর্ণ নথি আপলোড, ভিডিও দেখা, ম্যাপ চালানো, এমনকি আর্থিক লেনদেনের মতো বহু কাজে আমরা এই একটি অ্যাকাউন্টের ওপর নির্ভর করি। ফলে এটি হ্যাক হয়ে গেলে ঝুঁকিতে পড়ে যায় আমাদের ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পদ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ অথচ কার্যকর নিয়ম মানলেই গুগল অ্যাকাউন্টকে হ্যাকারদের নাগালের বাইরে রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ছয়টি বিষয়, যা গুগল অ্যাকাউন্ট সুরক্ষায় অবশ্যই মেনে চলা উচিত।

১. পাসওয়ার্ড হোক জটিল ও ইউনিক

পাসওয়ার্ড যেন হয় শক্ত ও অনুমান করা কঠিন। নিজের নাম, জন্মতারিখ কিংবা ‘১২৩৪৫৬’-এর মতো সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে হ্যাকারদের কাজ সহজ হয়ে যায়। ছোট ও বড় হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং প্রতীক মিলিয়ে একটি ইউনিক পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। একই পাসওয়ার্ড যেন একাধিক অ্যাকাউন্টে ব্যবহার না হয়।

টিপস: পাসওয়ার্ড মনে রাখতে সমস্যা হলে ভরসা করতে পারেন পাসওয়ার্ড ম্যানেজার অ্যাপে।

২. চালু করুন দুই স্তরের নিরাপত্তা

শুধু পাসওয়ার্ড নয়, গুগল অ্যাকাউন্টে যুক্ত করুন টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন (2FA)। এতে আপনি নতুন কোনো ডিভাইস থেকে লগইন করলে শুধু পাসওয়ার্ড নয়, মোবাইলে আসা একবার ব্যবহারযোগ্য কোডও দিতে হবে। এতে হ্যাকারদের জন্য প্রবেশ অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।

৩. পুরনো বা অন্যদের ডিভাইস থেকে সাইন আউট করুন

অফিসের কম্পিউটার, বন্ধু বা আত্মীয়ের মোবাইলে লগইন করেও আমরা অনেক সময় সাইন আউট করতে ভুলে যাই। এতে অজান্তেই অন্য কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যেতে পারে।

কী করবেন: গুগলের ‘Your Devices’ অপশনে গিয়ে কোন কোন ডিভাইসে আপনি লগইন করে আছেন, তা দেখে অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস থেকে সাইন আউট করুন।

৪. অ্যাপের অপ্রয়োজনীয় অনুমতি বাতিল

অনেকেই ‘Sign in with Google’ অপশন ব্যবহার করে বিভিন্ন অ্যাপে সাইন ইন করেন। পরে সেই অ্যাপ ব্যবহার না করলেও তারা আপনার গুগল অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস রাখে। এটা হ্যাকারদের জন্য একটি বড় সুযোগ।

সমাধান: নিয়মিত গুগল অ্যাকাউন্টের ‘Security > Third-party apps with account access’ অংশে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের অনুমতি বাতিল করুন।

৫. পাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার? ভিপিএন চালু রাখুন

রেস্টুরেন্ট, বিমানবন্দর বা হোটেলের পাবলিক ওয়াই-ফাই হ্যাকারদের ফাঁদ হয়ে উঠতে পারে। এই ঝুঁকি এড়াতে VPN (Virtual Private Network) ব্যবহার করতে হবে। এটি আপনার ডেটা এনক্রিপ্ট করে পাঠায়, ফলে মাঝপথে তথ্য চুরি করা সম্ভব হয় না।

৬. অচেনা লিংক থেকে দূরে থাকুন

ই-মেইল বা মেসেজে আসা চটকদার অফার বা ছদ্মবেশী বার্তায় থাকা লিংকে ক্লিক করলেই আপনার তথ্য চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে। এটিই হলো ফিশিং।

বুদ্ধিমানের কাজ হবে: কোনো সন্দেহজনক বার্তা বা লিংক দেখলে তাতে না ক্লিক করে তা ডিলিট করে দেওয়া।

একটি গুগল অ্যাকাউন্টে শুধু ই–মেইল নয়, এতে জমা থাকে আমাদের জীবনযাপনের বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সুতরাং নিরাপত্তায় সামান্য অবহেলাও হতে পারে বড় বিপদের কারণ। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হন—এই ছয়টি বিষয় মেনে চলুন, নিজেকেই সুরক্ষিত রাখুন।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ।