ছবিঃ সংগৃহীত
গুগল এলএলসি একটি মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যা মূলত বিভিন্ন ইন্টারনেট-ভিত্তিক সেবা ও পণ্য প্রদান করে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল আজ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের। তবে কিছু দেশ রয়েছে, যেখানে গুগলের এই ব্যাপক আধিপত্য নেই বললেই চলে।
আজ আমরা এমন চারটি দেশের কথা জানবো, যেখানে গুগল তার অবস্থান শক্ত করতে পারেনি কিংবা বিভিন্ন কারণে নিষিদ্ধ।
১. চীন
চীন বরাবরই আত্মনির্ভরশীল প্রযুক্তি ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। বহু আগেই দেশটি গুগল, বিং, ইয়াহু, এমনকি ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে। তবে চীনারা একেবারে বঞ্চিত নয়। তারা নিজেদের তৈরি সার্চ ইঞ্জিন Baidu এবং Sogou ব্যবহার করে থাকে।
বর্তমানে চীনের সার্চ ইঞ্জিন বাজারে Baidu দখল করে আছে প্রায় ৬৯.৫৫% এবং Sogou প্রায় ১৬.৮১%।
তবে গুগল চীনে একেবারে নিষিদ্ধ নয়—চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং এবং ম্যাকাও-তে গুগল স্বাভাবিকভাবে ব্যবহৃত হয়।
২. উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া একান্তভাবেই বাইরের বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্র। ফলে গুগলসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখানে পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
তাদের নিজস্ব কোনো বড় ধরনের সার্চ ইঞ্জিন না থাকায়, চীনের Baidu-র মতো কিছু সেবা সীমিতভাবে ব্যবহার করা হয় বলে জানা যায়। দেশটির ইন্টারনেট ব্যবস্থাও অত্যন্ত সীমাবদ্ধ এবং কড়াভাবে নিয়ন্ত্রিত।
৩. দক্ষিণ কোরিয়া
চীন ও উত্তর কোরিয়ায় গুগল নিষিদ্ধ হওয়া রাজনৈতিক কারণে স্বাভাবিক মনে হলেও, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে গুগলের ব্যর্থতা অনেককে অবাক করে।
বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার দেশ হওয়া সত্ত্বেও, দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ গুগলের পরিবর্তে নিজেদের তৈরি সার্চ ইঞ্জিন Naver ব্যবহার করে থাকে।
১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা Naver এতটাই জনপ্রিয় যে, একে অনেকেই ‘কোরিয়ান গুগল’ বলেও আখ্যা দেন। এখানকার ব্যবহারকারীরা স্থানীয় ভাষা ও কনটেন্ট ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করায়, গুগল এখানে কখনোই মূলধারায় আসতে পারেনি।
৪. রাশিয়া
রাশিয়াও গুগলের জন্য আরেকটি ব্যর্থতার উদাহরণ। যদিও দেশটিতে গুগল নিষিদ্ধ নয়, তবুও গুগল রাশিয়ার স্থানীয় সার্চ ইঞ্জিন Yandex-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে আছে।
Yandex রাশিয়ার বাজারের প্রায় ৫৫% অংশ দখল করে রেখেছে এবং এটি কেবল রাশিয়াতেই নয়, বরং বেলারুশ, কাজাখস্তান ও ইউক্রেনেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
Yandex গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সেবার বৈচিত্র্য এনেছে—যেমন রাইড-শেয়ারিং, খাবার সরবরাহ এবং ভিডিও স্ট্রিমিং ইত্যাদি। ২০২০ সালের মহামারিকালেও প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করেছে।
সূত্রঃ টেকটিউনস
ইমরান
